মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই পানিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর বহু এলাকা। সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ৯টার পর থেকে মাত্র দেড় ঘণ্টায় ৬৪ মিলিমিটার এবং ২৪ ঘণ্টায় ৫৬.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। এতে নগরীর নিচু ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমে যায়, সৃষ্টি হয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরের জিইসি মোড়, চকবাজার, মুরাদপুর, কাতালগঞ্জ, আগ্রাবাদ, বাকলিয়া, হালিশহর, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, জামাল খান, রিয়াজউদ্দিন বাজারসহ অন্তত ২০টির বেশি এলাকায় পানি জমে যায়। বেশ কিছু দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে। অনেক এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েন অফিসগামী মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পানিতে ভিজে কেন্দ্রে পৌঁছাতে বাধ্য হন। রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা বন্ধ থাকায় যাত্রীরা দ্বিগুণ ভাড়া গুনে গন্তব্যে পৌঁছান।
চান্দগাঁও, লালখান বাজার ও ফয়’স লেক সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টির পানি নিচের ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়ে। পাহাড়ধসের আশঙ্কায় অনেক পরিবার নিজেরাই নিরাপদ স্থানে সরে যান।
নগরের সাধারণ মানুষ ও পরিবেশকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, প্রতিবছরই এমন দুর্ভোগ দেখা গেলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ। কয়েকশ কোটি টাকার ড্রেনেজ প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
চান্দগাঁওয়ের বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন,“প্রতি বছর একই ভোগান্তি পোহাই। শুধু প্রকল্প আর বরাদ্দের গল্প শুনি, বাস্তবে কিছুই বদলায় না।”
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় থেমে আছে যানবাহন, কোমরসমান পানি পেরিয়ে মানুষ হেঁটে চলেছে, দোকানে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়েছে। মানুষের প্রশ্ন— ‘এই দুর্ভোগের শেষ কোথায়?’
মেগা প্রকল্পের কথা বলা হলেও, নগরের অবস্থা দেখে মনে হয়— সামান্য বৃষ্টিতেই যেন চট্টগ্রাম এক জলশহরে রূপ নেয়।
একুশে সংবাদ/চ.প্র/এ.জে