ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক ও চালকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন। রোববার (২৭ জুলাই) সকাল থেকে জেলার সর্বত্র এ কর্মবিরতি শুরু হয়, যা যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে জেলা শহরের মেড্ডা এলাকায় ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিএনজি অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’-এর এক জরুরি সভায় এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
রোববার সকালে সরেজমিনে সরাইল উপজেলার বিভিন্ন সিএনজি স্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, চালকরা লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হয়ে থাকলেও কোনো সিএনজি ছেড়ে যাচ্ছে না। যাত্রীরা বিকল্প হিসেবে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যাত্রা করতে চাইলে সিএনজি চালকরা সেগুলোর সিট খুলে দিচ্ছেন, অনেকক্ষেত্রে যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এক শিক্ষার্থী জানান, “সকাল ৭টায় বাসা থেকে বের হয়েছি। বিশ্বরোডে পৌঁছাতে পাঁচবার গাড়ি বদলাতে হয়েছে। আজ পরীক্ষা আছে, সময়মতো না পৌঁছাতে পারলে আমার একটা বছর শেষ হয়ে যাবে। এর দায় কে নেবে?”
নন্দনপুরগামী অফিসযাত্রী রাসেল মিয়া বলেন, “প্রতিদিন সিএনজিতে অফিসে যাই। আজ হেঁটে যেতে হচ্ছে। এটা খুব কষ্টদায়ক।”
এদিকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকরা অভিযোগ করেছেন, তাদের মারধর করা হচ্ছে। সরাইল উপজেলা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সংগঠনের নেতা স্বপন মিয়া বলেন, “সিএনজির কর্মবিরতির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারপরও তারা আমাদের চালকদের বিভিন্ন পয়েন্টে মারধর করছে। আমরা সংঘর্ষে যেতে চাই না, প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।”
সিএনজি মালিক ও শ্রমিকদের দাবি, ট্রাফিক পুলিশের লাগাতার হয়রানি, ঘুষ দাবি, বিনা কারণে গাড়ি জব্দ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে বিআরটিএ-তে দুর্নীতির কারণে তারা এই কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মিজানুর রহমান বলেন, “আমাদের ১০০টির বেশি গাড়ি আটক রয়েছে। আইন মেনে চালাতে চাই, কিন্তু দুর্নীতির কারণে লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন পাচ্ছি না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চলবে।”
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, “যেসব যানবাহনের কাগজপত্র নেই, সেগুলো আটক করা হচ্ছে। বৈধ কাগজ থাকলে কোনো সমস্যা নেই। তারা মূলত চায় যেন পুলিশ কিছুই না করে। এখন পর্যন্ত তাদের কেউ আমাদের কাছে এসে অভিযোগ করেনি।”
একুশে সংবাদ/ব্রা.প্র/এ.জে