গাজীপুরের শ্রীপুরে ১০ দফা দাবীতে আরএকে সিরামিক কারখানার শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ কওে বিক্ষোভ করছে। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন আটকা পড়ে প্রায় পাঁচ কিলো মিটার এলাকা যানজটের লেগে থাকে। রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপজেলার নয়নপুর (ধনুয়া) এলাকায় দুই ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকেরা জানায়, তাদের ১০ দফা দাবীগুলো হলো চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বেতনের সাথে ইনক্রিমেন্টের ৭ মাসের এরিয়ার বিল আগস্ট মাসের ১ তারিখের মধ্যে প্রদান করতে হবে, শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সঠিক পদে সঠিক কর্মচারী নিয়োগ দিতে হবে এবং যোগ্য পদে অযোগ্য লোক থাকলে তাকে অতিদ্রæত অপসারণের করতে হবে, প্রতি বছরের ফেব্রæয়ারী মাসে বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী মান সম্মত বাড়তি বেতন নিশ্চিত করতে হবে, আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলনরত অবস্থায় আমরা যতদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকবো ততদিনই কার্যদিবস বা হাজিরায় দিতে হবে, নতুন ও পুরাতন শ্রমিকদের বেতন কাঠামো সঠিকভাবে প্রণয়ন করতে হবে, সিভিলদের সর্বনিম্ম ৫০০ টাকা হাজিরা দিতে হবে, ১৫০০ টাকা হাজিরা বোনাস করতে হবে, আন্দোলনের পরে কর্মস্থলে যোগদান করার পর যদি কোন কর্মচারী বা শ্রমিককে বহিস্কার বা চাকুরিচ্যুত্যি করা হয় তবে পুনরায় আন্দোলন সংগঠিত হবে, বয়স্কভাতাসহ পুরাতন সকল সুযোগ-সুবিধা পুনরায় চালু করতে হবে, কোম্পানীর ভেতর থেকে শুরু করে কোম্পানীর উচ্চ পদস্থ সকল ভারতীয়দেরকে অনতিবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। তারা দীর্ঘদিন যাবত এসব দাবী জানিয়ে আসলেও কারখানা কৃর্তপক্ষ তাদের দাবী মানছেন না এবং এ বিষয়ে কোনো সমাধানে আসছে নান। তাই আমরা আমাদের দাবী নিয়ে আজকে আনোলনে নেমেছি। তারা অভিযোগ করেন দীর্ঘদিন যাবত কর্তৃপক্ষ তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছে। বারবার দাবী জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ তাদের দাবীগুলোর বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এদিকে, খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও মাওনা হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদেও বুঝানোর চেষ্টা করলেও তারা সড়ক থেকে সওে যায়নি। পরে সাকল সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ শ্রমিকদের টিয়ারশ্যাল ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করলে দুই ঘন্টা পর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
আরএকে সিরামিক কারখানার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শ্রমিকদেও দাবীগুলো যচাই-বাছাই করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তাদের অনেকগুলো দাবী যুক্তিসঙ্গত না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ অযৌক্তিক দাবী মেনে নিতে পারছে না।

গাজীপুর মিল্প পুলিমের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আব্দুল লতিফ বলেন, টিয়ারসেল নিক্ষেপ কওে শ্রমিকদেরকে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, শ্রমিকদেও বুঝিয়ে সড়ক থেকে সড়ানোর চেষ্টান করা হয়। পওে তারা সড়ক না ছাড়লে টিয়ারশ্যাল ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করলে শ্রমিকেরা সড়ক থেকে সড়ে গেলে সকাল সাড়ে ৮টায় যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
আরএকে সিরামিক কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের (এইচআর এন্ড এডমিন) কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তাদের দাবীর বিষয়ে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তারা কর্তৃপক্ষকে সময় না দিয়ে কিছু উশৃঙ্খল শ্রমিকের উস্কানীতে মহাসড়কে গিয়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে।
একুশে সংবাদ/গা.প্র/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

