বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার প্রভাবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর মোংলা বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় নৌ বিপদ সংকেত জারি করেছে। এতে মোংলা ও আশপাশের উপকূলীয় এলাকায় উদ্বেগ ও সতর্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্দরে থাকা জাহাজগুলোকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি ছোট নৌযানগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এ কারণে আজ সকাল থেকেই মোংলা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মেঘলা আকাশ, মাঝারি ধরনের দমকা বাতাস এবং সময় সময়ে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত চলছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মোঃ মাকরুজ্জামান বলেন, “৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত থাকা সত্ত্বেও বন্দরের কার্যক্রম এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে আবহাওয়ার অবনতি ঘটলে জরুরি ভিত্তিতে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করার প্রস্তুতি নেওয়া হবে।” তিনি জানান, বর্তমানে মোংলা বন্দরে ১১টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে, যেগুলোতে এলপিজি, কয়লা, চাল, ক্লিংকার ও পাথর রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “পশুর নদী ও বন্দর চ্যানেলে থাকা সকল জাহাজকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে। সার্বক্ষণিকভাবে জাহাজগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে, যাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত নেয়া যায়।”
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার সুমি জানান, “উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূলীয় এলাকার মানুষের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আবহাওয়ার অবনতি হলে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হবে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং ও প্রচার চালানো হবে।”
স্থানীয় জেলেদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পক্ষ থেকে উপকূলীয় এলাকায় সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা এলাকায় আবহাওয়া গুরুত্বপূর্ণ থাকতে পারে। তাই উপকূলবাসীর প্রতি বারবার আবহাওয়ার হালনাগাদ তথ্য জানার এবং সরকারি নির্দেশনা অনুসরণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেওয়া যায়।
উল্লেখ্য, ৩ নম্বর নৌ সংকেত মানে সাগর ও নদীবন্দর এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত নয়, বরং আগাম সতর্কতা হিসেবে পূর্ব প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দেওয়া হয়।
মোংলা বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত জারির ফলে স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসনের মধ্যে সতর্কতা বাড়ছে। সকল সংশ্লিষ্ট মহল পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
একুশে সংবাদ/বা.প্র/এ.জে