নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রথম বর্ষের এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ করে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পর অপহরণকারীরা পরিবারের কাছে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করেছে এবং টাকা না দিলে মেয়েকে বড় ধরনের ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছে। বর্তমানে আহত ছাত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মুড়াপাড়া সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্রী। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় পরীক্ষার জন্য বাসা থেকে কলেজে যাচ্ছিলেন ওই ছাত্রী। কলেজে পৌঁছানোর আগে তাকে অপহরণ করে একদল অজ্ঞাত পরিচয়ধারী ব্যক্তি অটো রিক্সায় তুলে নিয়ে যায়। দুপুর পর্যন্ত কলেজে না পৌঁছানোয় পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়।
এরপর ওই ছাত্রীর মোবাইল নম্বর থেকে পরিবারের কাছে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় এবং হুমকি দেওয়া হয়— টাকা না দিলে মেয়ের বড় ধরনের ক্ষতি করা হবে। অপহরণকারীদের ফোন পেয়ে পরিবার আতঙ্কিত হয় এবং রূপগঞ্জ থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে।
বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে মুড়াপাড়া সরকারি কলেজের পেছনের ঝোপের পাশে স্থানীয়রা মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় ছাত্রীকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ডাক্তাররা ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি মহল বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা "গণধর্ষণ" বা "ধর্ষণের শিকার" হয়েছে বলে মিথ্যে তথ্য ছড়াচ্ছে, যা ঘটনার সত্যতা উদঘাটনের আগে বিভ্রান্তিকর।
ভুক্তভোগীর মা নাসরিন রূপগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে বলেন, "আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। এখন সে গুরুতর অসুস্থ, আমরা তার জীবনের জন্য চিন্তিত। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দেওয়ার।"
রূপগঞ্জ থানার ওসি জানান, ঘটনার পরপরই অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল ট্র্যাকিংসহ প্রযুক্তিগত সহায়তায় অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। ধর্ষণের বিষয়টি মেডিকেল রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে