AB Bank
  • ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ভোলার মেয়ে নাদিয়ার জানাজা শেষে ঢাকায় দাফন সম্পন্ন



ভোলার মেয়ে নাদিয়ার জানাজা শেষে ঢাকায় দাফন সম্পন্ন

ঢাকার উত্তরায় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ভোলার দৌলতখানের মেয়ে তাহিয়া তাবাসসুম নাদিয়া (১৩)’র নামাজে জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে জোহরের নামাজ শেষে ঢাকার উত্তরার কামার পাড়া রাজবাড়ী পুকুর পাড় এলাকার জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাজা শেষে নানা বাড়ীর ওই এলাকায় নাদিয়াকে দাফন করা হয়েছে। সোমবার রাত ৩টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। নাদিয়া মাইলস্টোন কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। গ্রামের বাড়ি দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে। ওই ইউনিয়নের চানকাজি হাওলাদার বাড়ির অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার আশরাফুল ইসলামের মেয়ে নাদিয়া।

জানা গেছে, বিমান দুর্ঘটনায় আগুনে নাদিয়ার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। গুরুতর আহত অবস্থায় নাদিয়াকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভর্তি করা হয়েছিল। বেঁচে থাকার দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানলো নাদিয়া। বাবা-মাকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন নাদিয়া। ছোট ছেলে একই কলেজের শিক্ষার্থীও হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এদিকে নাদিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এক সন্তানের অকাল মৃত্যু, অন্য সন্তান বার্ণ ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে এমন পরিস্থিতিতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছে বাবা-মা।

এদিকে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে নিঝুমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার গ্রামের বাড়ি ভোলার দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগরে চলে মাতম। ওই গ্রামের চান কাজী হাওলাদার বাড়িতে সরেজমিনে দেখা গেছে, স্বজনেরা কাঁদছেন। ছোটবেলার খেলার সাথী নিঝুমকে হারিয়ে মাকে জড়িয়ে অঝোরে কান্না করছে চাচাতো বোন ইশরাত জাহান (১৪) ও তার ছোট বোন মুনতাহার (১১)। সঙ্গে মা বিবি আয়শাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

স্থানীয় হালিমা খানম গার্লস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ইশরাত জাহান ও তার ছোট বোন নুর মিয়ার হাট শিশু একাডেমির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মুনতাহার জানায়, তাদের সঙ্গে ২০২২ সালে চাচাতো বোন নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুমের শেষ দেখা ও কথা হয়েছিল। নিহত নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুম ও আরিয়া নাশরাফ নাফির দাদা এ কে এম আলতাফ হোসেন মাস্টার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ওদের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম নিরবের ইচ্ছা ছিল ছেলেমেয়েকে ভালো স্কুলে পড়িয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানাবে। সে জন্য ১৫-১৬ বছর আগে থেকে ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ি কামারপাড়া এলাকায় বাসাভাড়া করে বসবাস করছিল। ছেলেমেয়েকে ভর্তি করেছিল কাছাকাছি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। কিন্তু আজ আমাদের সবার সে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নাতি-নাতনি দুজনেই দগ্ধ হয়ে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন থাকার পর নাতনি মারা গেল। আর নাতি হাসপাতালের আইসিইউতে।

নিহত নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুমের চাচি মোরশেদা বলেন, আমরা গতকাল বেলা দেড়টার দিকে বিমান দুর্ঘটনার খবর পেয়ে প্রথমে আমার ভাশুর নিরবকে ফোন দেই। কিন্তু তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়ায় আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে খোঁজখবর নেই। পরে জানতে পারি নিঝুম ও নাফিকে দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওদের খবর পেয়ে ভাশুর নিরবও স্ট্রোক করেন। শেষ পর্যন্ত তাঁকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই হাসপাতালে বাবা ও ছেলেমেয়েকে ভর্তি করার পর আজ সকালে আমরা নিঝুমের মৃত্যুর খবর পাই। নিঝুমের চাচা মো. হাসান জানান, তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। স্বজনদের কান্নায় চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত এই ছাত্রীর মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিয়তি রাণী কৈরী ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান। তাঁরা বলেন, আমরা শুনেছি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর এলাকার এক ছাত্রী মারা গেছে। যদিও তার মা-বাবা এখানে থাকেন না। তাঁরা ঢাকাতেই থাকেন।

ঢাকার উত্তরার কামার পাড়া রাজবাড়ী পুকুর পাড় এলাকার জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে জোহরের নামাজ শেষে শিক্ষার্থীর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাজা শেষে নানা বাড়ীর ওই এলাকায় নাদিয়াকে দাফন করা হয়েছে। 


একুশে সংবাদ/ভো.প্র/এ.জে

Link copied!