গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ঘিরে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় পৃথক চারটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। প্রতিটি মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহত ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের কর্মী এবং তারা দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। এসব মামলায় মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৪০০ জন।
এদিকে, ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া রমজান মুন্সির ঘটনায় আরেকটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) গভীর রাতে গোপালগঞ্জ সদর থানায় চারজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে এসব মামলা দায়ের করেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আইয়ুব হোসেন বাদী হয়ে রমজান কাজী নিহতের ঘটনায় একটি মামলা করেন। এই মামলায় আসামি করা হয়েছে ৮০০ থেকে ৯০০ জনকে। এজাহারে বলা হয়, গত ১৬ জুলাই এনসিপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শেষে গাড়িবহর নিয়ে মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হলে গোপালগঞ্জ শহরের এসকে সালেহিয়া মাদ্রাসার কাছে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী বাধা দিলে হামলাকারীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর গুলি চালায়। এতে রমজান কাজী (১৭) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
একইভাবে দীপ্ত সাহা (২৭) নিহতের ঘটনায় সদর থানার এসআই মো. শামীম হোসেন অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার এজাহারে বলা হয়, কলেজ মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা প্রতিরোধ করতে গেলে দীপ্ত সাহা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
মোবাইল ব্যবসায়ী সোহেল রানা মোল্লা নিহতের ঘটনায় এসআই আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ জনকে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, লঞ্চঘাট এলাকার হোটেল রাজের সামনে হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে গুলি ছোড়া হয়। এতে সোহেল রানা মোল্লা (৩০) নিহত হন।
এছাড়া, ইমন তালুকদার হত্যার ঘটনায় এসআই শেখ মিজানুর রহমান বাদী হয়ে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায়ও ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়, শহরের পুরাতন সোনালী ব্যাংকের সামনে এনসিপির গাড়িবহরে হামলা চলাকালে গুলিতে ইমন তালুকদার আহত হয়ে মারা যান।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত চারটি হত্যা মামলা হয়েছে। প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাতনামা বিপুলসংখ্যক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। আরেকটি মামলা আরও পরে হতে পারে।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে