গোপালগঞ্জে কারফিউর সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। এদিকে এখন পর্যন্ত ১৬৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর আগে শুক্রবার (১৮ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়েছিল। এর আগে বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়।
কারফিউ শিথিলের সময় কিছুক্ষণের জন্য স্বাভাবিক চেহারায় ফিরেছিল শহরের চিত্র। তখন বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়। প্রয়োজনীয় কাজে মানুষ বাইরে বের হয়। কিছু দোকান খুললেও অধিকাংশ মার্কেট বন্ধ ছিল।
শহরের বড় বাজারের ফল ব্যবসায়ী রতন সাহা বলেন, ‘দোকান খুলতে না পারায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি। তিনদিনে প্রায় ৩০ হাজার টাকার ফল নষ্ট হয়ে গেছে। শুক্রবার তিন ঘণ্টার জন্য দোকান খুললাম। এত অল্প সময়ে কতটুকুই বা বিক্রি করা যায়। আমরা চাই, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।’
এর আগে গেল বুধবার এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি) নেতাদের ওপর হামলার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোপালগঞ্জ। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন স্থানে, পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘাতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শহর। এরপরই কারফিউ জারি করা হয়। এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। চলছে যৌথবাহিনীর অভিযান। শেষ খবর পর্যন্ত ১৬৪ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গ্রেফতারদের মধ্যে—সদর থানা থেকে ৪৫ জন,মুকসুদপুর থানা থেকে ৬৬ জন,কাশিয়ানী থানা থেকে ২৪ জন,টুঙ্গিপাড়া থানা থেকে ১৭ জন, কোটালীপাড়া থানা থেকে ১২ জন।
গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, মারধর ও গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) গভীর রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহম্মেদ আলী বিশ্বাস বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালসহ ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, ১৬ জুলাই সকালে এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কের উলপুর এলাকায় পুলিশ দায়িত্ব পালন করছিল। ওই সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের নেতৃত্বে একদল হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করে, মারধর করে ও গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এতে পুলিশ পরিদর্শক আহম্মেদ আলী বিশ্বাসসহ ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হন।
একুশে সংবাদ/জা.নি/এ.জে