জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে নারায়ণগঞ্জে দেশের প্রথম ` জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ` উদ্বোধন করা হয়েছে।সোমবার (১৪ জুলাই) নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জে বিকাল ৩ টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সার্বিক তত্ত্বাবধানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত দেশের প্রথম ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ৩৬ জুলাই ২০২৪ এ ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিজয় অর্জিত হয়েছে। এই বিজয়ের বর্ষপূর্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে সারাদেশে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণ করছে।তারই পরিপ্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জে দেশের প্রথম জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলায় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিল্প এবং গৃহায়ন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জনাব ড. মো: মোখলেস উর রহমান, সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জনাব মোঃ নজরুল ইসলাম, বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা জনাব শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার অক্লান্ত পরিশ্রমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জায়গা নির্ধারণ করে তার সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান করা হয় এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে শহীদের স্মরণে শহীদ পরিবারের ও আহতদের পক্ষ থেকে জুলাই যোদ্ধাদের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর পর উপদেষ্টামন্ডলী ও অন্যান্য অতিথিরা জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে অতিথিরা তাদের বক্তব্যে জুলাইয়ের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাই কে সোচ্চার থাকার আহবান জানান। অনুষ্ঠানের শেষে জুলাই শহীদ ও আহত সহ সবার জন্য মোনাজাতের মাধ্যমে দোয়া করা হয়।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রশাসনের কর্মকর্তারা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সামাজিক ব্যক্তিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যক্তিবর্গ।
উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারায়ণগঞ্জে ৫৬ জন শহিদ হয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বৈষম্যবিরোধী দেশ পেয়েছি। তাদের পরিবার অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। তাই তাদের সম্মানেই নারায়ণগঞ্জ থেকে দেশের প্রথম শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা শুরু হলো।
উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, নারায়ণগঞ্জে যারা শহিদ হয়েছিল, তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। এ আন্দোলনে শহীদদের যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে- তাদের বিচার করা হবে।
শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, শহীদের স্মরণে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে প্রথম জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভটি তৈরি করা হয়েছে। আমরা আজ নারায়ণগঞ্জের শহীদদের প্রাণভরে স্মরণ করছি। তাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে