ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলায় চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৩ জন। অকৃতকার্য হয়েছে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফলাফল পর্যালোচনায় এ চিত্র উঠে এসেছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৩৪টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টি বিদ্যালয়ের পাশের হার ৫০ শতাংশের কম। মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় ১৬টি মাদরাসার মধ্যে ৫টি মাদরাসার ফলাফল অর্ধেকের কম পাশ করেছে। কারিগরি ৬টি প্রতিষ্ঠানের ফলাফলে সর্বনিম্ন পাসের হার ৫৯.০৯ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ২০২৫ সালে প্রকাশিত মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন গৌরীপুর উপজেলার ৩৪টি বিদ্যালয় থেকে ৩৩৫৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল, যার মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২৭ জন, ১৮১৭ জন কৃতকার্য হয়েছে, যার শতকরা হার ৫৪.১৭। অকৃতকার্য হয়েছে ১৫৩৭ জন, শতকরা হার-৪৫.৮৩।
বাংলাদেশ মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উপজেলায় ১৬টি মাদরাসায় ৪২৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ২২০ জন, জিপিএ পেয়েছে ১৩ জন, শতকরা হার ৫১.৫২, অকৃতকার্য হয়েছে ২০৭ জন, অকৃতকার্যের শতকরা হার ৪৮.৪৮।
কারিগরি ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৯৩ জন পরীক্ষার্থীর মাঝে কৃতকার্য হয়েছে ৫৪১ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন, শতকরা পাশের হার ৭৮.০৬, অকৃতকার্য হয়েছে ১৫২ জন, যার শতকরা হার ২১.৯৪।
উপজেলার অগ্রদূত নিকেতন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, রামগোপালপুর জিকেপি উচ্চ বিদ্যালয়, লালখান উচ্চ বিদ্যালয়, পাছার উচ্চ বিদ্যালয়, গিধাউষা হাসন আলী ফকির উচ্চ বিদ্যালয়, মোজাফফর আলী ফকির উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, চান্দের সাটিয়া মডেল স্কুল, খলতবাড়ি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ ২০টি বিদ্যালয়ের ফলাফল ৪০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে।
শিক্ষক-অভিভাবক মহল বলছেন, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগের অভাব, নিয়মিত ক্লাস না করা, পর্যাপ্ত গাইডলাইন ও অনুশীলনের ঘাটতি এবং প্রযুক্তির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি এই ফলাফলের পেছনে বড় কারণ।
স্থানীয় এক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমরা ঠিকভাবে পড়াশোনায় ফিরে আসতে পারিনি, দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পড়াশোনায় ঘাটতি হয়েছে। তাছাড়া, সঠিকভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতির নিতে পারিনি।’
অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম বলেন, এখনই প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারলে আগামীতে শিক্ষার মান আরও নিচে নেমে যেতে পারে। শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন করে বিনিয়োগ ও মনোযোগ না দিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিপদের মুখে পড়বে—এমনটাই আশঙ্কা অভিজ্ঞ মহলের।
গৌরীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহাদত হোসেন বলেন, ‘ফলাফল বিশ্লেষণ করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে পৃথকভাবে মূল্যায়ন করা হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষায় পাসশর হার ৯০ শতাংশে উন্নীত করা ও মানোন্নয়নের জন্য শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি করা, নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশ করা, শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উদ্যোগ, পাঠোভ্যাস তৈরি করে বই পড়ার দিকে মনোযোগী করে গড়ে তোলার কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।’
একুশে সংবাদ/ম.প্র/এ.জে