মৌলভীবাজারে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বিশেষ অভিযানে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ভারতীয় চোরাই প্রসাধনীসহ দুই চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সাধুহাটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর আগে সরকারবাজার এলাকায় একটি চেকপোস্ট বসানো হয়। ওই সময় একটি রেফ্রিজারেটর ভ্যানকে থামার নির্দেশ দিলে চালক পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ধাওয়া করে ভ্যানটিকে সাধুহাটি এলাকায় আটক করে।
পরবর্তীতে ভ্যানে তল্লাশি চালিয়ে ১৬,১৬৪টি ফেসক্রিম ও ১৯২টি ফেসওয়াশ উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৪৯ লাখ ৭৭ হাজার ৩৩৬ টাকা। অভিযানে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটর ভ্যানটিও জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—সুনামগঞ্জ জেলার গোলাম কিবরিয়া ওরফে সুলতান (২০) এবং কক্সবাজার জেলার মো. মনির হোসাইন (৩৮)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, এসব পণ্য সিলেট সীমান্ত এলাকা থেকে সংগ্রহ করে ঢাকায় পাচারের পরিকল্পনা ছিল তাদের। তারা আরও স্বীকার করেন, দীর্ঘদিন ধরেই তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ভারতীয় চোরাই পণ্য সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে আসছিলেন।
অভিযান পরিচালনা বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “চোরাচালান প্রতিরোধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা আরও জোরদার করা হয়েছে।”
পুলিশের ধারণা, মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয় চোরাই পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের পেছনে একটি সুসংগঠিত চক্র সক্রিয় রয়েছে। এ চক্রকে আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। পুলিশ জানায়, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে চোরাচালান চক্র সম্পর্কে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে।
জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণকে চোরাচালান সম্পর্কিত তথ্য দিয়ে সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধ করে একটি নিরাপদ সমাজ গঠন সম্ভব হয়।
একুশে সংবাদ/মৌ.প্র/এ.জে