পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলার পৃথক এলাকায় দূর্ঘটনায় নারী-শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।রোববার (৬ জুলাই) বিকেলে পঞ্চগড় পৌরসভার আহমদনগড় এলাকায় ও দুপুরে তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এবং তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন, পঞ্চগড় পৌরসভার আহমদনগড় এলাকার গোলাম আহমদ প্রধানের ছেলে মাসুদ আল মামুন (৪২)। অপরজন তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের খাটিয়াগছ এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী খুরশিদ জাহান খুঁশি (২২)। এসময় আহত হয়েছেণ খুঁশির স্বামী আনোয়ার হোসেন (৩২)। তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের মাগুরা এলাকার আয়নাল হকের মেয়ে আসমা খাতুন (১৫ মাস)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুরে বাড়ির পাশের করতোয়া নদীতে গোসল করতে নামেন মাসুম আল মামুন। গোসল করতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ বাসায় না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা নদীতে নেমে খোঁজাখুঁজি করলেও মামুনের সন্ধান মেলেনি। এদিকে পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের খবর দেয়া হলে স্থানীয়দের সহায়তায় নদী থেকে ডুবন্ত অবস্থায় ব্যবসায়ী মামুনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
তবে পরিবারসহ স্থানীয়দের ধারণা, ব্যবসায়ী মাসুম আল মামুন নদীতে গোসল করতে নেমে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এদিকে তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানা পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, গত কুরবানী ঈদের দুইদিন পরে উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মুনিগছ এলাকায় বিয়ে করেন আনোয়ার হোসেন। রবিবার দুপুরে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্ত্রী খুরশিদ জাহান খুঁশিকে নিয়ে মোটরসাইকেলে ফিরছিলেন বাড়িতে। পথিমধ্যে তারা ভজনপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পাথরবাহী ট্রাক্টর তাদের ধাক্কা দেয়। এসময় মহাসড়কে ছিটকে পড়েন তারা। ঘটনার সাথে সাথে খুরশিদ জাহান খুঁশির শরীরের উপর দিয়ে ট্রাক্টরের পেছনের চাকা চলে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে স্বামী আনোয়ার হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে স্ত্রী খুঁশিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলে পথিমধ্যে মারা যায় খুঁশি। এদিকে ঘটনার পরপরই পাথরবাহী ট্রাক্টর নিয়ে পালিয়ে যায় চালক।
অপরদিকে পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে বাসায় পারিবারিক কাজ করছিলেন মা বানেছা আক্তার। এ সময় বাড়ির উঠানে খেলা করছিল শিশু আসমা খাতুন। এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে বাইরে বের হয় সে। পরে বাড়ির পাশের একটি ডোবাতে পড়ে যায় শিশুটি। পরিবারের সদস্যরা আসমাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে শিশুটিকে ডোবার পানিতে ভাসতে দেখেন দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান, তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ রায় ও তেঁতুলিয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কমলেস চন্দ্র রায় নিহতের বিষয়গুলো নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল শেষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/প.প্র/এ.জে