নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচলে আলোচিত ১১ বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বাদীপক্ষকে ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকির ঘটনা দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে সেই মামলার বাদী পরিবারের একজন সদস্য ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. রাশেদকে উপজেলার পূর্বাচল উপশহরে ভোলানাথপুর ১৩ নম্বর সেক্টরের তার নিজ অফিস থেকে অপহরণ করে একটি পরিত্যক্ত বাগানবাড়িতে আটকে রাখা হয়। সেখানে তাকে মারধর করে ৭০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে ।
পরে তার স্বজনরা জরুরি নাম্বার ৯৯৯ ফোন করে পুলিশের সাহায্য নেন।
খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে এ ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন সাব্বির হোসেন (৩১), শান্ত (৩৩), মো. রনি মিয়া (২৬), রাসেল মিয়া (৩১), রনি (২৫), ও শিমুল ওরফে শিবলু (২৮)। তারা সবাই রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলানাথপুর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী মো. রাশেদ সাংবাদিকদের জানান, ২০১৮ সালে আমার চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে সুবর্নাকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার বিচার চেয়ে আমরা মামলা করি। কিন্তু মামলা তুলে নিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল, সাব্বির, শান্তসহ তাদের সহযোগী আসামিপক্ষের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে আমাদের হুমকি দিয়ে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার দুপুরে পূর্বাচলের অফিস থেকে আমাকে অপহরণ করে একটি পরিত্যক্ত বাগানবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে তারা ৭০ লাখ টাকা দাবি করে। আমার পরিবার বিষয়টি জরুরি নাম্বার ৯৯৯ ফোন দিয়ে জানালে অপহরণকারীরা পরিস্থিতি আঁচ করে আমাকে আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থানায় সোপর্দ করতে চায়। পরে পুলিশ তাদের আটক করে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার দুপুরে যুবদল নেতা রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে ৮-১০ জনের একটি দল রাশেদের অফিসে গিয়ে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমরা অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাতে ভিকটিমকে উদ্ধার করি এবং ঘটনাস্থল থেকে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করি।’
তিনি আরও জানান, ‘গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের আলোচিত ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে অপহরণ ও মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে