বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় মঙ্গলবার (২৪ জুন ) সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করেছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। কর্মসূচি চলাকালে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে ব্যানার-ফেস্টুন হাতে দাঁড়িয়ে ৬ দফা দাবির পক্ষে অবস্থান নেন তারা।
মোংলা উপজেলা শাখার আয়োজনে আয়োজিত এই কর্মবিরতিতে অংশ নেন স্থানীয় স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা শাখার সভাপতি এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকর্মীরা।
বক্তারা বলেন, ‘স্বাস্থ্য সহকারীরা জন্মের পর থেকেই শিশুদের ১০টি মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। অথচ এই টেকনিক্যাল ও গুরুত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এখনো আমাদের টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া হয়নি।’
তারা আরও বলেন, ‘আমাদের নিয়োগবিধি যুগোপযোগী নয়। স্নাতক ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও আমরা ১৬তম গ্রেডে পড়ে আছি, যা এক ধরনের অপমানের শামিল। দীর্ঘদিন ধরে আমরা টেকনিক্যাল পদমর্যাদা ও ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণের দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু এখনও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
স্বাস্থ্য সহকারীরা জানান, তাদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের ১৪তম গ্রেডে উন্নীতকরণ, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমার মাধ্যমে টেকনিক্যাল স্বীকৃতি ও ১১তম গ্রেড প্রদান, পদোন্নতিতে ধারাবাহিক উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করা, পুরোনো নিয়োগপ্রাপ্তদের আত্মীকরণ, টাইম স্কেল ও উচ্চতর গ্রেড গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা এবং পূর্ববর্তী ডিপ্লোমাধারীদের স্বীকৃতি দিয়ে বেতন স্কেলে উন্নীত করা।
তারা অভিযোগ করেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুপারিশ ও নীতিগত সম্মতি থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। ফলে ২৬ হাজারের বেশি স্বাস্থ্য সহকারী আজও বঞ্চনার শিকার।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব থেকে সরে যেতে চাই না। কিন্তু যদি আমাদের দাবি বাস্তবায়নের কার্যক্রম আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শুরু না হয়, তাহলে বাধ্য হয়ে ইপিআইসহ সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হবে।’
শেষে তারা বর্তমান সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবির প্রতি আন্তরিকতার সঙ্গে বিবেচনা করে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানান। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী কর্মসূচি চলবে বলেও জানান তারা।
একুশে সংবাদ/বা.প্র/এ.জে