AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

জীবননগরে পার্ক ভরাটের বরাদ্দ পিআইসির নামে, বিল নিয়ে নয়-ছয় ইউএনওর



জীবননগরে পার্ক ভরাটের বরাদ্দ পিআইসির নামে, বিল নিয়ে নয়-ছয় ইউএনওর

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে একটি পার্কের উন্নয়নের নামে পিআইসির মাধ্যমে ২ লাখ টাকা উত্তোলন করে আবার ফেরত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আরও একটি বরাদ্দ ওঠানোর চেষ্টা করা হলে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন অপর পিআইসি এক ইউপি সদস্য।

দুই লাখ টাকা ওঠানো পিআইসি ইউপি সদস্যের দাবি, সব কাজ ইউএনও স্যার করেছেন আমি কিছুই জানি না। টাকা তুলে ইউএনও স্যারের নামে তার অফিসের লোকের কাছেই বুঝিয়ে দিয়েছি।

এছাড়া আরেক পিআইসি ইউপি সদস্যকে দিয়ে একই স্থানের উন্নয়নের নামে আরও ১১ লাখ টাকা উত্তোলন করতে চাইলে ওই ইউপি সদস্যের বিরোধিতায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। সাড়ে ৫ লাখ টাকার বিল দিলেও ওই পিআইসি ইউপি সদস্যের দাবি, তিনি ব্যাংকে জমা করেননি বিলটি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের একতারপুর বাঁওড়ের পাশে বেশ কয়েক বছর ধরে একটি সরকারি পার্কের কাজ চলছে। তবে ওই পার্কের সাইড বাড়ানোর জন্য জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একতারপুর বাঁওড় থেকে বেশ কিছুদিন যাবৎ বালু তুলছিলেন। স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বালু তোলা বন্ধ করে দেন ইউএনও। সরকারি বাঁওড় থেকে বালু তুলে পার্ক ভরাট করা হলেও সেখানে পিআইসির মাধ্যমে ২ লাখ টাকা এরই মধ্যে তুলে নিয়েছেন জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-আমীন।

কেডিকে ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য ও ওই পার্কের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পিআইসি সভাপতি স্বপ্না খাতুন বলেন, দুইবারে ২ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ইউএনও সাহেব আমাকে পিআইসি বানিয়েছেন। আমার হাতে টাকা-পয়সা কিছু দেননি। আমাকে শুধু পিআইসি করা হয়েছে এটা আমি জানি। ওখানে কাজ হচ্ছে কি না সেটা আমি জানি না।

তিনি আরও বলেন, আমি কিছুই জানি না। সোহেল আমাকে বলেছে, আমাকে পিআইসি বানানো হয়েছে। তার কাছেই সব টাকা দিয়েছি। আমাকে কেউ এক টাকাও দেয়নি। একজন ইউএনও যদি বলেন, আমি কী করব। তারপরও আমি ইউএনওকে বলে এসেছি, এরপর থেকে আমাদেরকে পিআইসি করবেন না। আমাদের মাথার ওপর ভেঙে আপনি খাচ্ছেন, আমরা খাচ্ছি না। এর মধ্যে আমরা কী করতে পারি। আমি মহিলা মানুষ, এত বুঝিনি। আর আমি কোনো টাকা-পয়সা পাইনি। ইউএনওর কাছে খোঁজ নেন।

অনুসন্ধানের একপর্যায়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের অফিস সহকারী সোহেল রানার সঙ্গে। প্রথমে টাকার বিষয়টি অস্বীকার করলেও স্বপ্না খাতুনের নাম শোনার পর সোহেল রানা বলেন, প্রকল্পটা বিভাগীয় কমিশনার স্যারের, পিআইসি স্বপ্না খাতুন। কিন্তু কাজতো সম্পূর্ণ করছেন ইউএনও স্যার। স্বপ্না খাতুনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে উপজেলা পরিষদের সিএ পিটু ভাইয়ের কাছে আমি টাকাটা দিয়েছিলাম।

কথা বলার একপর্যায়ে সোহেল রানা বলেন, এখানে পিটু ভাই আছেন। তার সঙ্গে আপনি কথা বলেন। তবে মুঠোফোনটি উপজেলা পরিষদের সিএ সেলিম মো. আহসানুর রহমান পিটু হাতে নিয়ে বলেন, ওটা প্রকল্পের টাকা। টাকাটা আমি নিইনি। আমার নেওয়ার ক্ষমতা নেই। সোহেল আমার কাছে দিয়েছে রাখার জন্য। ইউএনও স্যার রাখতে বলেছেন। টাকা স্যারের কাছে আছে। ব্যয় হয়েছে কি না বলতে পারছি না। স্যার বোধহয় প্রকল্পের কাজের টাকা শোধ করেছেন আরকি।

অপরদিকে একই স্থান তথা ওই পার্কের উন্নয়নের নামেই কেডিকে ইউনিয়নের আরেক ইউপি সদস্য আব্বাস আলীকে একটি প্রকল্পের পিআইসি করা হয়েছে। ইউএনও মো. আল-আমীন নিজে কাজ করলেও ইউপি সদস্য আব্বাস আলীকে দিয়ে প্রকল্পের টাকা ওঠানোর জন্য ইউএনও অফিস থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে অর্ধেক ব্যয় তথা সাড়ে ৫ লাখ টাকা বিল ওঠানোর কাগজপত্র ইউপি সদস্য আব্বাস আলীকে দেওয়া হয়েছে। তবে নিজে কাজ না করেও টাকা তুলে দেওয়াটাকে দায়িত্বহীনতা মনে করছেন ইউপি সদস্য আব্বাস আলী। তিনি বলেছেন টাকা তুলবেন না।

কেডিকে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আব্বাস আলী বলেন, একতারপুর বাঁওড়ের পাশে যে পার্ক নির্মাণ হচ্ছে সেখানে মাটি ভরাটের জন্য পিআইও অফিস থেকে আমাকে পিআইসি করে ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু পিআইসি হিসেবে আমার নাম থাকলেও ইউএনও স্যার নিজে বাঁওড় থেকে বালু তুলে সেটা ভরাট করছেন। এখন আমাকে উপজেলায় ডেকে ওই টাকা তুলে দিতে বলছেন। সাড়ে ৫ লাখ টাকার একটি কাগজ দিয়েছেন ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য। আমি সেটি জমা দিইনি। আমার দোকানে রেখে দিয়েছি। আমি বলে এসেছি, কাজের পিআইসি আমি, আমি জানি না যে কাজ শেষ হয়েছে। কীভাবে কাজ শেষ হলো? আমি কাজ না করে টাকা তুলব না। ইউএনও সারের সঙ্গে দেখা করব। তাকে বলব, আমি পিআইসি হলে আমাকে দিয়েই কাজ করাতে হবে। আপনি কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না সেটি দেখবেন। এভাবে টাকা তুলে দিতে পারব না।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অঞ্জন কুণ্ডু বলেন, একতারপুর বাঁওড়ের পাশে পার্কের উন্নয়ন কাজে পিআইসি ও ইউপি সদস্য স্বপ্না খাতুন দুই বারে এক লাখ টাকা করে মোট দুই লাখ টাকা তুলেছেন। এছাড়া আরেকজন পিআইসি ইউপি সদস্য আব্বাস আলীর বরাদ্দ ১১ লাখ টাকা। এর মধ্যে অর্ধেক অর্থাৎ সাড়ে ৫ লাখ টাকা তোলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-আমীনের সঙ্গে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

 

 

একুশে সংবাদ/চু.প্র/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!