ঈদুল আজহার ছুটিকে কেন্দ্র করে দেশের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ঢল নেমেছে। শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, কটেজ ও গেস্ট হাউসে অধিকাংশ রুমই পূর্ণ হয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
রবিবার (৮ জুন) সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকরা দলে দলে কক্সবাজারে পৌঁছাতে শুরু করেছেন। সৈকতের নীল জলের পাশে বিস্তৃত বালুকাবেলায় পরিবার-পরিজন নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন তারা। সৈকতে বসানো কিটকটগুলোর সবগুলোতেই পর্যটকদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কেউ ঘোড়ায়, কেউ বিচ বাইকে আবার কেউ জেটস্কিতে চড়ে উপভোগ করছেন আনন্দঘন মুহূর্ত।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, ঈদ উপলক্ষে দশ দিনের দীর্ঘ ছুটিতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক ছুটেছেন কক্সবাজারে। প্রায় সব হোটেল-রিসোর্টই আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। সোমবার থেকে ভিড় আরও বাড়বে বলেও তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন।
পর্যটক সুদাইস, যিনি কুমিল্লা থেকে এসেছেন, বলেন, ‘সকালে পরিবারসহ কক্সবাজারে এসেছি। ডলফিন মোড় এলাকায় একটি হোটেলে উঠেছি। রুম ভাড়া কিছুটা বেশি মনে হলেও পরিবেশ ভালো লাগছে।’
ঢাকা থেকে আসা হুমায়ূন আজাদ জানান, বহুদিন ধরেই কক্সবাজারে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। অবশেষে এবার পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। ‘সমুদ্রের গর্জন আর প্রকৃতি মন ভালো করে দিচ্ছে’— বলেন তিনি।
প্রথমবার কক্সবাজার ঘুরতে আসা সিলেটের লন্ডন প্রবাসী কামরুল বলেন, ‘কোনো বিনোদন কেন্দ্রে এত মানুষের সমাগম আমি আগে দেখিনি। দারুণ লাগছে।’
সমুদ্র সৈকতে দায়িত্ব পালনরত বিচ কর্মীদের তদারক কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান, লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে পর্যটকদের ব্যাপক ভিড় দেখা যাচ্ছে। বিকেলের দিকে জনসমাগম আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা সার্বক্ষণিক নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন।
সি সেফ লাইফ গার্ড ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন ভুট্টু বলেন, ‘এই মুহূর্তে সমুদ্র কিছুটা উত্তাল। নিরাপদ স্থানগুলো হলুদ পতাকা দিয়ে এবং বিপজ্জনক এলাকাগুলো লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে অনেক পর্যটক নিয়ম মানছেন না, যা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, ঈদের ছুটিতে আগত পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও মাঠে রয়েছে।
একুশে সংবাদ/ ঢ.প/ এ.জে