AB Bank
  • ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৬ জুন, ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কালাইয়ে কোরবানির হাটে দাম নিয়ে ভিন্ন মত: ক্রেতার দাবি চড়া, বিক্রেতার অভিযোগ লোকসান



কালাইয়ে কোরবানির হাটে দাম নিয়ে ভিন্ন মত: ক্রেতার দাবি চড়া, বিক্রেতার অভিযোগ লোকসান

পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার কোরবানির পশুর হাটগুলোতে জমে উঠেছে গরু, ছাগল ও মহিষ কেনাবেচা। তবে বাজারে প্রবেশ করলেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে এক অদ্ভুত টানাপোড়েন ক্রেতারা বলছেন, দাম বেড়েছে আর বিক্রেতারা বলছেন, লাভ তো দূরে থাক, খরচই উঠছে না! উপজেলার কোরবানির পশুর হাটে সরবরাহ যেমন বেশি, তেমনি রয়েছে দামের পার্থক্য নিয়ে দ্বন্দ্ব। ক্রেতা- বিক্রেতা উভয়েই নিজ নিজ অবস্থানে যৌক্তিকতা দেখালেও মূল সমাধান নির্ভর করছে শেষ মুহূর্তের বাজার গতির ওপর।

কালাই সদরের তালুকদারপাড়া থেকে গরু কিনতে এসেছেন মহিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, গতবার ১ লাখ ৩০ হাজারে যে গরু পাওয়া গিয়েছিল, এবার তার জন্য ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে। আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য এটা সত্যিই কষ্টকর।

ক্রেতা আশরাফুল বলেন, গরুর সরবরাহ অনেক হলেও দাম বেশি মনে হচ্ছে। প্রতি গরুতে গড়ে ১০-১২ হাজার টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে।

একই ধরনের মতো দেন ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, বাড়িতে জায়গা কম থাকায় ঈদের দুই-তিন দিন আগে গরু কিনতে সুবিধা হয়। এখন শুধু দরদাম যাচাই করছি। তবে এবার দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে!

তবে বিক্রেতারা ভিন্ন সুরে বলছেন। গোলাহার গ্রামের খামারি সাজেদুর রহমান জানান, গোখাদ্য, খড়, ওষুধ সব কিছুর দাম বেড়েছে। প্রতিটি গরু লালনপালনে ১৫–২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। এখন যদি সঠিক দাম না পাই, তবে আমরা তো ক্ষতিগ্রস্ত হব।

কালাইয়ের আরেক বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, ১৫টি গরু এনেছি কিন্তু হাটে দাম হচ্ছে না। কেউ ১ লাখ ৪০ বা ১ লাখ ৫০ বলছে, কেউ আরও কম। ফিরিয়ে নিতে গেলে পরিবহন ও খাওয়ানোর খরচ বাড়বে, তাই বাধ্য হয়ে বিক্রি করছি। তেমন লাভ তো হচ্ছেই না।

উপজেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানায়, এবছর উপজেলায় ৩৮ হাজার ৫৭৩টি খামারে দেশি, অস্ট্রেলিয়ান ও ফ্রিজিয়ান জাতের ১ লাখ ৮৪ হাজার ৪৩৭টি গবাদিপশু লালনপালন করা হয়েছে। এর মধ্যে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ৭৬ হাজার গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া। চাহিদা রয়েছে ৫৭ হাজার ১৪৭টি পশুর। ইতোমধ্যে  বাকি প্রায় ২০ হাজার পশু দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়েছে।

এবার হাটে বড় আকারের গরুর চেয়ে মাঝারি ও ছোট গরুর চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছেন খামারিরা। বড় গরুর দাম চাইলেও ক্রেতারা আগ্রহ কম দেখাচ্ছেন।

উপজেলার সবচেয়ে বড় হাট পুনটে গিয়ে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকেই হাট কানায় কানায় পূর্ণ। খামারি, প্রান্তিক কৃষক এবং ব্যাপারিরা গরু নিয়ে আসছেন। পছন্দসই পশু কেনার জন্য ঘুরে ঘুরে দরদাম করছেন ক্রেতারা।

ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী বলেন, হাটে প্রচুর পশু এসেছে। তবে এখনও অনেক ক্রেতা অপেক্ষায় আছেন। শেষ মুহূর্তে বিক্রি ভালো হবে বলে আশা করছি।

খামারিরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন, যাতে বৈধ বা অবৈধভাবে বিদেশি গরু আমদানি না হয়। তাদের ভাষ্য, এতে স্থানীয় খামারিরা সঠিক মূল্য থেকে বঞ্চিত হবেন।

কাথাইল গ্রামের মুর্শিদা বেগম বলেন, আমি ৮টি ষাঁড় গরু প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজা করেছি। হাটে যদি মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য না থাকে, তবে ভালো দাম পাওয়া সম্ভব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান জানান, এ বছর ৬টি স্থায়ী ও অস্থায়ী হাট বসানো হয়েছে। প্রতিটি হাটে নিরাপত্তা, মেডিকেল টিম এবং জাল টাকা শনাক্তকরণ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রশাসন নিয়মিত তদারকি করছে।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম রয়েছে। খামারিরা যাতে রোগমুক্ত ও সুস্থ পশু বিক্রি করতে পারেন সে লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। তিনি আরও জানান, ‘চলতি বছরে পশু বিক্রয়কে কেন্দ্র করে প্রায় ৩২০ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে।
 

 

একুশে সংবাদ/ জ.প্র/এ.জে

Link copied!