পটুয়াখালীর বাউফলে সাংবাদিকদের জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, "আমি প্রজাতন্ত্রের এমন চাকর, মালিককে জেলে দিয়ে শাস্তিও দিতে পারি। আমি কারো ফোন ধরতে বাধ্য নই। আমার বাংলো একটা অফিস—সেখানে গিয়ে আমন্ত্রণ জানাতে হতো।"
সোমবার (১৯ মে) বাউফল আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতা চলাকালে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বসে ইউএনও এ মন্তব্য করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এবং কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি এমরান হাসান সোহেল বলেন, “তিন দিন ধরে ইউএনওকে অফিসে খুঁজেও পাওয়া যায়নি, ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাকে অবহিত করার চেষ্টা করেছিলাম।”
চটে যান ইউএনও: বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ইউএনও ক্ষুব্ধ হয়ে জিজ্ঞাসা করেন, কেন তাকে অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। জবাবে সোহেল জানান, ইউএনও তিন দিন কার্যালয়ে ছিলেন না এবং ফোন রিসিভও করেননি। এতে উত্তেজিত হয়ে ইউএনও বলেন,
“আপনারা রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি হয়ে গেছেন মনে করেন? আমি ফোন ধরতে বাধ্য নই।”
পিয়নের মাধ্যমে ভয়ভীতি ও চাপ: সোহেলের পাশাপাশি, উপস্থিত সাংবাদিক খবরপত্রের প্রতিনিধি এইচ এম বাবলুকেও ইউএনওর পিয়নের মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখানো হয় এবং ক্ষমা চাইতে চাপ দেওয়া হয়। এমন আচরণে উপস্থিত সকলে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন।
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
প্রশাসনের অবস্থান: জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন জানান, “এ বিষয়ে এখনো আমার কাছে কোনো তথ্য আসেনি। তথ্য পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে দুর্নীতি দমন কমিশন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি। অনুষ্ঠানে ইউএনওর এমন আচরণে স্থানীয় সাংবাদিক মহল এবং সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন।
একুশে সংবাদ/ প.প্র/এ.জে