মুন্সীগঞ্জের মাওয়া থেকে মাদারীপুরের শিবচরের পাচ্চর পর্যন্ত পদ্মা সেতুর সার্ভিস এলাকা ও সংযোগ সড়কে স্থাপন করা হয়েছে ১৩৩টি আধুনিক সিসি ক্যামেরা। পুরো সেতু ও তার আশপাশের এলাকাকে নজরদারির আওতায় আনায় যানবাহন চলাচল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এসেছে আমূল পরিবর্তন।
গত মঙ্গলবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য হলে দিনটি যোগ করা যাবে) পদ্মা সেতুতে ক্যামেরা স্থাপন কাজ শেষ হয়। এখন সেতুতে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ চলছে, যা যেকোনো দুর্ঘটনা, যানজট, অপরাধ বা জরুরি পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করছে।
পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট দূরত্বে চার ধরনের উন্নতমানের সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে, যেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে জুম করে নির্দিষ্ট স্থানে নজরদারি করতে পারে। মাওয়া প্রান্তে একটি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে চার সদস্যের দল সার্বক্ষণিক এই ফুটেজ মনিটর করছেন। প্রয়োজনে দ্রুত টহল দল পাঠানো হচ্ছে ঘটনাস্থলে।
সেতুর দুই প্রান্তের এক্সপ্রেসওয়ের মতো পদ্মা সেতুতেও সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে। নতুন প্রযুক্তি গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ, যান শনাক্তকরণ এবং দুর্ঘটনাপরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দ্রুত যানবাহনের অবস্থান চিহ্নিত করা যাচ্ছে, ফলে যানজটে পড়া বা দুর্ঘটনাগ্রস্ত যান উদ্ধার সহজতর হয়েছে। একই সঙ্গে ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের আশঙ্কাও অনেক কমে এসেছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) ও যুগ্ম সচিব আলতাফ হোসেন শেখ বলেন, “সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সেতুর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসেই নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে। একইসঙ্গে বিবিএ প্রধান কার্যালয়ের সেতু ভবন থেকেও পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে। এতে যেকোনো জরুরি অবস্থায় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে।”
নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ জানান, “উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরাগুলো ৩৬০ ডিগ্রি কোণে ঘুরে কাজ করতে সক্ষম। এতে জুম করে দৃশ্য অত্যন্ত স্পষ্টভাবে দেখা সম্ভব। ক্যামেরাগুলোতে স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া শনাক্তকরণ প্রযুক্তিও রয়েছে, যা তাপমাত্রা, কুয়াশা ও দৃশ্যমানতার মাত্রা নির্দেশ করে।”
পদ্মা সেতু প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক শেখ ইশতিয়াক আহমেদ জানান, “পদ্মা সেতুতে ব্যবহার করা হয়েছে ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস)। এটি ভিডিও নজরদারি, যান শনাক্তকরণ ও রাস্তার আবহাওয়াজনিত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি সমন্বিত নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা সিস্টেম নিশ্চিত করে।”
তিনি আরও বলেন, “বিশেষ করে শীতকালে ঘন কুয়াশার সময় যখন দৃশ্যমানতা ৪০ মিটারের নিচে নেমে আসে, তখন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেতুতে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক কমে এসেছে।”
একুশে সংবাদ/মু.প্র/এ.জে