রাজশাহীর তানোরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর দুই গ্রুপের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের জেরে স্থানীয় চৌবাড়িয়া হাটে গরু ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথম দফা সংঘর্ষ ঘটে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাত ১১টার দিকে চৌবাড়িয়া মালশিরা সিএনজি স্ট্যান্ডে এবং দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ ঘটে শুক্রবার বিকেলে চৌবাড়িয়া হাটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং তানোর পৌর ছাত্রদলের নেতা সোহানুর রহমান শুভ। আহত সাইফুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয়, কামারগাঁ ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি মিজানুর রহমানের বিল্ডিং ঢালাই উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাতে আয়োজিত এক দাওয়াত অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী তারেক গ্রুপের অনুসারীরা উপস্থিত হলে শরীফ গ্রুপের অনুসারী সুলতান মদ্যপ অবস্থায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে প্রথম দফায় মারামারি হয়।
এরই জেরে শুক্রবার চৌবাড়িয়া হাটে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষে সাইফুল ইসলামের ওপর হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শরীফ অনুসারী সুলতান, মান্নান ও পিন্টুর নেতৃত্বে সাইফুলকে লোহার রড, হাতুড়ি ও বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। তাকে বিবস্ত্র করে টেনে হিচড়ে পাশের নলপুকুরিয়া এলাকায় নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রাখা হয়।
সাইফুলের ছেলে সজিব ও ভাগ্নে এনামুল জানান, তিনি হাটে ৬টি গরু বিক্রি করতে যান। পাঁচটি গরু বিক্রির পর হামলাকারীরা তার টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।
অন্যদিকে শরীফ গ্রুপ দাবি করে, বৃহস্পতিবার রাতে দাওয়াতে "ঘোড়ার মাংস" সংক্রান্ত কটুক্তির জের ধরে সুলতানকে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে সুলতানের লোকজন পাল্টা হামলা চালায়।
এ বিষয়ে সাবেক মেম্বার ও বিএনপি নেতা মান্নান জানান, তিনি শুক্রবারের সংঘর্ষে উপস্থিত ছিলেন না। তবে বৃহস্পতিবার রাতে মারামারির খবর তাকে ফোনে জানানো হয়।
ঘটনার বিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, “সংঘর্ষের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, এর আগে রমজান মাসে ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে পাঁচন্দর ও চান্দুড়িয়া ইউনিয়নে পৃথক দুটি গ্রুপের সংঘর্ষে দুই বিএনপি নেতার মৃত্যু ঘটে। এর ফলে তানোরে বিএনপির রাজনৈতিক কার্যক্রম দীর্ঘদিন স্থবির হয়ে পড়ে।
একুশে সংবাদ/রা.প্র/এ.জে