মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিগত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের খরস্রোতা ধলাই নদীর বাঁধ ভাঙন আতঙ্কে কাটছে নদীপারের বাসিন্দাদের। বিগত কয়েক বছরের ভয়াবহ বন্যায় রামপাশা, রামপুর, নারায়ণপুর, চৈতন্যগঞ্জ, কুমড়াকাঁপন, কান্দিগাঁও সহ প্রায় ১০-১২টি গ্রাম তলিয়ে যায়। নদী ভাঙনের কারণে ইতিমধ্যে রামপাশা গ্রামের ৪০-৫০টি বাড়িঘর, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। আসন্ন বর্ষায় আবারও ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে মানুষের।
রবিবার (১১ মে) দুপুর ১২টার দিকে এলাকাবাসীর আয়োজনে উপজেলার পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডে বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় বাঁধ নির্মাণ, জিও ব্যাগ পাইলিংয়ের দাবিতে ছাইয়াখালী হাওড় (পাবসস) লি. ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন।
জানা যায়, উপজেলার পৌর এলাকার রামপাশা এলাকা বিগত বছরের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে খরস্রোতা ধলাই নদীর রামপাশা এলাকায় বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়।
বাঁধ ভাঙনের কারণে ইতিমধ্যে নদীর তীরবর্তী মো. আব্দুন নূর চৌধুরী, মো. আব্দুর রব চৌধুরী, মো. আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী, এম আর খান, হারিছ মিয়া, আজিদ মিয়া, জমির ড্রাইভার, রহিম মিয়া, করিম মিয়া, আলমগীর মিয়া, আশিক মিয়া, আরফান মিয়া, রাজু, তাজুদ মিয়া, রমজান মিয়া, লটা মালাকার, নিকিল মালাকার, মণিন্দ্র মালাকার, জয়ধন মালাকার, জোগিন্দ্র মালাকার, হায়দর মিয়া, রবেন্দ্র মালাকার, প্রাণেশ কুমার পাল, প্রবেশ কিমার পাল, পরিতোষ কুমার পাল, প্রদীপ কুমার পাল, পঙ্কজ কুমার পাল, খিরদ দেবনাথ, মণি দেবনাথ, সুনিল দেবনাথ, মাহমুদা বেগম, আক্তার মিয়া, আশ্রব মিয়া, আবু মিয়া, মন্তাজ বক্স, বিরাই বক্স, মতলিব বক্স, মনির বক্স, মন্নান বক্স, আলিজ্জামা, বিকুল কুমার পাল তাদের বাপ-দাদার ভিটা হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে। বর্তমানে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
আসন্ন বর্ষা মৌসুমে আবারো আকস্মিক বন্যার আশঙ্কায় রামপাশাসহ নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। রামপাশা এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গ্রামবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জামায়েত ইসলামি নেতা সৈয়দ ইব্রাহিম মোহাম্মদ আবদুহু, ছাইয়াখালী হাওড় উন্নয়ন (পাবসস) লি. এর সাধারণ সম্পাদক ওয়াকিল আহমেদ, নাজমুল হাসান মিঠু, ফখরু চৌধুরী, নিখিল মালাকার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, প্রতিবছর ধলাই নদীর ভাঙনের কারণে রামপাশা এলাকা বিলীন হতে চলেছে।
বিগত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে রামপাশা এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। ইতিমধ্যে তা পানিতে ভেসে গিয়ে বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে নদীর বাঁধ।
পানি বৃদ্ধি পেলে বাঁধ ভেঙ্গঙ ১০-১২ গ্রামসহ বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাবে। তাই এলাকাবাসী বাঁধটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে নদীতে বিষ দিয়ে অবাধে মাছ মারা হচ্ছে, তা যেন বন্ধ করা হয়, তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
একুশে সংবাদ/মৌ.প্র/এ.জে