AB Bank
  • ঢাকা
  • রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

চাঁদপুরে যাত্রী সংকটের কারণে অর্ধেকে নেমেছে লঞ্চ চলাচল



চাঁদপুরে যাত্রী সংকটের কারণে অর্ধেকে নেমেছে লঞ্চ চলাচল

যাত্রী সংকটের কারণে চাঁদপুর রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি হয়েছে। ঢাকা-চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ নৌ রুটে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রতিদিন যেখানে অর্ধশতাধিক লঞ্চ চলাচল করতো সেখানে এখন মাত্র ২০-২৫টি চলাচল করছে। 
লোকসানের মুখে এ রুটে যাতায়াতকারী অধিকাংশ লঞ্চমালিক কর্মচারীদের বেতন দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন।

এদিকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে যাত্রী কমে যাওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে যানবাহন এবং গড়ে ওঠা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। যাত্রী কমে যাওয়ায় অনেক শ্রমিক অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। বর্তমানে লঞ্চের শ্রমিক থেকে শুরু করে যানবাহন চালক ও ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন।

লঞ্চের স্টাফ ও মালিক প্রতিনিধিরা জানান, ঢাকা-চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ রুটে আগে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০টির বেশি লঞ্চ চলাচল করত। এখন তা ২০-২৫টিতে নেমে এসেছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে তারা পদ্মা সেতু চালু ও সড়কপথের উন্নতিকে দায়ী করছেন। এখন যাত্রীরা কম ভাড়ায় এবং কম সময়ে বাস ও ভাড়ায়চালিত মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কারে যাতায়াত করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। তবে বর্ষা ও কালবৈশাখী মৌসুমে নদীপথে যাত্রী কমে যাওয়াকেও একটি কারণ হিসেবে দেখছেন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।

চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এমভি রহমত লঞ্চের সুপারভাইজার সোহেল ও কেরানী আলমগীর জানান, আগে ঈদ বা বিশেষ দিনগুলোতে লঞ্চ পরিপূর্ণ থাকত। সাধারণ সময়েও মোটামুটি লাভ হতো। তবে গত দুই-তিন বছর ধরে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় অনেক লঞ্চ মালিক লঞ্চ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। আগে যাদের তিন থেকে চারটি লঞ্চ চলত, লোকসানের কারণে এখন তারা একটি লঞ্চ পরিচালনা করছেন। তারা আরও জানান, প্রতিদিন একটি লঞ্চের পরিচালন খরচ প্রায় এক লাখ ২০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা। এর বাইরে শ্রমিকদের বেতন তো রয়েছেই। বর্তমানে প্রতি সার্ভিসে লঞ্চ মালিকরা ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনছেন। যাত্রী কমে যাওয়ায় ঢাকা-চাঁদপুর রুটের অনেক লঞ্চ এখন অন্য রুটেও চলাচল করছে।

চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এমভি রহমত লঞ্চের যাত্রী মঞ্জু আহমেদ বলেন, লঞ্চে যাতায়াত আরামদায়ক হলেও দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বেশিরভাগ সময় তিনি সড়ক পথ ব্যবহার করেন। বিশেষ করে ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমে নৌপথ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেকেই লঞ্চে যেতে চান না। লঞ্চগুলোকে আরও আধুনিক করে যাতায়াতের সময় ও ভাড়া কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো প্রয়োজন, না হলে যাত্রীর সংখ্যা আরও কমে যাবে।

চাঁদপুর লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি বিপ্লব সরকার জানান, সড়ক পথের সুবিধা এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে যাত্রীরা এখন লঞ্চের পরিবর্তে সড়ক পথ বেছে নিচ্ছেন। এছাড়া যত্রতত্র স্ট্যান্ড বসিয়ে কম টাকায় মাইক্রো ও প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। তিনি মনে করেন, বিআইডব্লিউটিএ ও মালিকদের যৌথ উদ্যোগে লঞ্চের সেবার মান বৃদ্ধি করা জরুরি।

বিপ্লব সরকার আরও জানান, বর্তমানে প্রতিটি লঞ্চ লোকসানের মুখে। অনেক মালিক বাধ্য হয়ে লঞ্চ বন্ধ করে দিচ্ছেন। বিআইডব্লিউটিএ ও মালিকদের যাত্রী সেবার মান বাড়িয়ে ভাড়া কমিয়ে এবং যাতায়াতের সময় কমাতে হবে, তাহলে যাত্রীরা আবারও লঞ্চে ভ্রমণ করতে উৎসাহিত হবে।

চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক বসির আলী খান জানান, ঢাকা-চাঁদপুর রুটে সবসময় কিছু যাত্রী থাকে। তবে সড়ক পথে সময় কম লাগায় এখন মানুষ বাস-মাইক্রোতে যাতায়াত করে। যারা নদীপথ আরামদায়ক মনে করেন, তারাই লঞ্চে যান। আবহাওয়া খারাপ হলে যাত্রীরা সড়কপথ বেছে নেন। লঞ্চ মালিকরা একত্রিত হয়ে একটি নির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারণ করে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা-চাঁদপুর লঞ্চ সার্ভিস চালু করতে পারলে যাত্রীরা আবারও লঞ্চে যাতায়াত শুরু করবেন এবং এক্ষেত্রে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।
 

 

একুশে সংবাদ/চাঁ.প্র/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!