দেশের উত্তরাঞ্চলের রেলওয়ে জংশন খ্যাত ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলা শহরের মোজাফফর নগর এলাকার অধিবাসী এবং ঢাকায় বসবাসরত অবসরপ্রাপ্ত ডি আই জি, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এইচ এম ফিরোজ কবীর মুকুল ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ৫ মে সোমবার দিবাগত রাত ১টায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না-লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ বাদ আছর, ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনের শহীদ শিরু মিয়া মিলনায়তনে মরহুম ফিরোজ কবীর মুকুলের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে নির্ভরশীল সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ পুলিশের ডি আই জি ফিরোজ কবীর মুকুল ১৯৫৪`র যুক্তফ্রন্টের সংসদ (কুষ্টিয়ার দৌলতপুর-ভেড়ামারা-মীরপুর) রাহাতুল্লাহ সরকারের পুত্র এবং সাবেক পরিবেশ ও বন অধিদপ্তরের ডাইরেক্টর,পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হামিদ, লন্ডন কিংস হাসপাতালের প্রফেসর ডা. আব্দুল বারী এবং সাবেক এডিশনাল সেক্রেটারি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মেম্বার ফাইনান্স এন্ড অপারেশন আব্দুল জলিলের ছোট ভাই।
তিনি ছাত্র জীবনে প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের সংগে যুক্ত ছিলেন, পুর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (মেনন) ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এন এস এফ গুণ্ডমুক্ত করেছিলেন। ১৯৬৫ সালে প্রথম বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সিকিউরিটি নিশ্চিত করে পুরান ঢাকার বলধা গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হয়। তিনি ’৭৯ এর গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটলায় সংঘটিত (অক্টোবর ১৯৭০) পুর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানি বংশউদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক ও ওয়ার্ল্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সভাপতি তারিক আলী। এই জনসভা থেকে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পুর্ব বাংলার ঘোষণা দেওয়া হয়। এই জনসভায় অতিথি হিসেবে ছিলেন মাহাবুবুল্লাহ, রাশেদ খান মেনন, কাজী জাফরসহ অনেক বামপন্থি ছাত্র, শ্রমিক জননেতা। সভাটি তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। যার উল্লেখ আছে তারিক আলীর "Pakistan Military Rule or People`s Power" বইতে।
১৯৭১ সালে ছাত্রনেতা আব্দুল কুদ্দুস মাখনের চিঠি নিয়ে তিনি ভারতে মুক্তি যুদ্ধের ট্রেনিং করতে যান এবং ট্রেনিং শেষে মুক্তিযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফের টু আই সি মেজর এ টি এম হায়দারের অধীনে মানিকগঞ্জ এলাকায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিসি এস (পুলিশ) হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮২ সালের স্বাধীনতা দিবসের জাতীয় কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দেন। মেহেরপুর জেলার প্রথম এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও এস আর পি, ডাইরেক্টর দুর্নীতি দমন ব্যুরো, এসপি পাসপোর্ট এন্ড ইমিগ্রেশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ডি আই জি অব পুলিশ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পুরান ঢাকার বিউটি বোর্ডিং এর ঐতিহ্য রক্ষার প্রধান উদ্যোক্তা।
একুশে সংবাদ/দি.প্র/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :