ঈদ উল ফিতরের আগে বরিশাল ও সন্নিহিত এলাকামুখি জনশ্রোত ঈদ পরবর্তি সময়ে এখনো কর্মস্থলমুখি। পরিবহন বিশেষজ্ঞ সহ মালিক ও শ্রমিকদের মতে এবারো ঈদ উল ফিতরের আগে পরে বরিশাল সহ সন্নিহিত এলাকার সাথে রাজধানী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের অন্তত দশ লাখ মানুষ যাতায়াত করছে। কিন্তু দেশের একমাত্র রেললাইন বিহীন বরিশাল বিভাগে এতদিন নৌপথেই ৭৫ ভাগ যাত্রী যাতায়াত করলেও পদ্মা সেতু চালু হবার পরে সড়ক পথেই ৬৫ ভাগ চলাচল করছে।
নদ-নদী বহুল বরিশাল অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী নৌপথে পৌনে দুশ বছরের জৌলুস হারাতে চললেও পদ্মা সেতু ও বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে’র পরে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল অঞ্চলের জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কগুলোর অবস্থা নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দময় নয়। বরিশাল মহানগরী থেকে ৯০ কিলোমিটার অপ্রসস্ত জাতীয় মহাসড়ক অতিক্রম করে উত্তরে ভাংগায় বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে পর্যন্ত পৌছতেই ৩-৪ ঘন্টা পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। ফলে পদ্মা সেতু চালু হবার পরে বরিশাল ও সন্নিহিত এলাকা রাজধানীর যতটা কাছে আসার কথা ছিল, তা এখনো সম্ভব হয়নি। এ মহাসড়কে যানবাহনের আধিক্য ৩গুনেরও বেশী বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীরপাশাপাশি উত্তরবঙ্গের সাথে বরিশাল অঞ্চলের সড়ক পরিবহনে বিড়ম্বনা আরো বেড়েছে।

ঈদকে সামনে রেখে গত কয়েকদিন ধরে পরিস্থিতি আরো নাজুক আকার ধারন করে। বরিশাল ও ভাংগা’র মধ্যবর্তি ৯০ কিলোমিটার মহাসড়কের বেশীরভাগ এলাকায়ই দিনরাত যানযট লেগে আছে।
এদিকে ঈদকে ঘিরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্বম বরিশাল নদী বন্দরে অতীতের চীরচেনা দৃশ্য না থাকলেও ঈদ পরবর্তি সময়ে যাত্রীদের পদভারে মুখরিত বিগত কয়েকটি দিন। বরিশাল-ঢাকা নৌপথে রুট পারমিটধারী প্রায় ২৯টি যাত্রীবাহী নৌযানের অন্তত ১০টি ইতোমধ্যে হারিয়ে গেলেও অবশিষ্টগুলো কোনমতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। রোববারে বরিশাল নদী বন্দর থেকে ১২টি নৌযান যাত্রী বোঝাই করে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবার পরে সোম ও মঙ্গলবারেও প্রায় একই পরিস্থিতি অব্যাহত ছিল। এমনকি বেশীরভাগ নৌযানই ধারন ক্ষমতার দ্বিগুনেরও বেশী যাত্রী বহন করলেও এবার নৌপথে ভাড়া বাড়ায়নি মালিক পক্ষ।। নিকটজনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরে ফেরা শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষ আগামী শণিবার পর্যন্তই বরিশাল ও সন্নিহিত এলাকা থেকে কর্মস্থলে ফিরবেন বলে আশা করছেন সড়ক ও নৌ পরিবহনের সাথে সংশ্লিষ্ট জনেরা। দুটি বাস টার্মিনাল ছাড়াও বরিশাল নদী বন্দরেও গত কয়েকদিন পা ফেলার স্থান নেই।

এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে এবার সড়ক পথে যে যার মত করে ভাড়া আদায় করছে। এমনকি অনেক নামী দামী সড়ক পরিবহন কোম্পানী রুট পারমিটের বাইরেও বাস নিয়ে আসছেন বরিশাল সহ আসে পাশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রুটে। ভাড়াও আদায় করছেন তাদের মত করেই। বরিশাল থেকে মাত্র ১৬৫ কিলোমিটার সড়ক পথে ঢাকার বাতানুকুল বাসে সাড়ে ১২শ টাকা ভাড়া আদায় এখন স্বাভাবিক ঘটনা। অথচ বিআরটিসি একই পথে ৬শ টাকায় যাত্রী পরিবহন করছে । তবে রাষ্ট্রীয় এ সড়ক পরিবহন সংস্থাটি ঈদ উপলক্ষে কোন বিশেষ বাস সার্ভিস প্রবর্তন করতে পারেনি যানবাহন স্বল্পতায়।
রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থাটি দিনরাতে বরিশাল-ঢাকা সড়ক পথে প্রায় ৩০টি বাতানুকুল বাসে যাত্রী পরিবহন করলেও সরকারী নৌ-বানিজ্য প্রতিষ্ঠান, বিআইডব্লিউটিসি এবারের ঈদে সম্পূর্ণই নিরুদ্বিগ্ন । দেশের একমাত্র অভ্যন্তরীন স্টিমার সার্ভিসের জন্য সংস্থাটির হাতে ৬টি যাত্রীবাহী নৌযান থাকলেও তার কোনটিই যাত্রী পরিবহনে নেই। এনিয়ে সংস্থাটির কর্তাদের কোন হেলদোল নেই।
রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থা-বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বরিশালের আকাশ পথে তার সাপ্তাহিক ৪টি ফ্লাইটের বাইরে ঈদের আগে ২টি বিশেষ উড়ানের ব্যবস্থা করলেও ঈদ পরবর্তি সময়ে চুপচাপই আছে। তবে বিগত পুরো সপ্তাহ যুড়েই যাত্রীর চাপে জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সটিও ৩২শ টাকার টিকেট সাড়ে ৮ হাজার টাকারও বেশী দামে বিক্রী করছে। এব্যাপারে বিমান-এর বরিশাল বিক্রয় অফিসের জেলা ব্যবস্থাপকের ল্যান্ডফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
একুশে সংবাদ/এস কে
 
    
                        

                                            
                                                        
                            
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
												
												
												
												
												
												
												
												
                                            
                                            
                                            
                                            
