AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোকামে ৮০ শতাংশ কমেছে ধান বেচাকেনা


Ekushey Sangbad
এনায়েত খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
০৪:৫৭ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোকামে ৮০ শতাংশ কমেছে ধান বেচাকেনা

সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, সিলেট ও হবিগঞ্জের হাওরাঞ্চল থেকে কৃষকরা ধান নিয়ে আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোকামে। এখান থেকে ধান সরবরাহ হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২৫০টি চালকলে। 

মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক লাখ মণ ধান বেচাকেনা হয় এখানে। তবে এ বছর প্রতিদিন বেচাকেনা হচ্ছে মাত্র ১৫-২০ হাজার মণ। সে হিসাবে বেচাকেনা কমেছে অন্তত ৮০ শতাংশ। কারণ হিসেবে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, গুদামে পর্যাপ্ত ধান মজুদ রয়েছে। 

এজন্য ধান তেমন একটা কিনছেন না আড়তদাররা। এছাড়া নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক পরিবেশ আরো অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কায় পাইকাররা চালও কিনছেন না। 

সরকারিভাবে খোলা বাজারে চাল বিক্রির কারণে বাজারে ধানের চাহিদাও কমেছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২৫০টির মতো চালকল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে প্রতিদিন ১০-১২ কোটি টাকার চাল বাজারজাত করা হয়। কিন্তু নভেম্বরের শেষ দিক থেকে ক্রমান্বয়ে কমছে চাল বেচাকেনা। নির্বাচন ঘিরে অস্থিতিশীল পরিবেশের আশঙ্কায় পাইকাররা চাল নিচ্ছেন না। দিনে ১২ কোটি টাকার চাল কেনাবেচা হলেও এখন হচ্ছে মাত্র ২ কোটি। এজন্য চালকল মালিকরা ধান খুব একটা কিনছেন না। ধান বেচাকেনা কম হওয়া লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সুনামগঞ্জের দিরাই থেকে আসা ধান ব্যবসায়ী আবু হানিফ বলেন, ‘আমার প্রতি মণ ধানে ১০০ টাকা করে লোকসান হবে। এভাবে লোকসান দিয়ে তো আর ব্যবসা করতে পারব না। পরিস্থিতি এমন চলতে থাকলে কৃষকের কাছ থেকে আর ধান কিনব না। ব্যবসায়ীরা যদি ধান না কেনেন তাহলে কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের আরেক ধান ব্যবসায়ী মো. কামাল বলেন, ‘কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কিনে নৌকায় করে নিয়ে এসেছি মোকামে। নৌকা ভাড়াসহ প্রতি মণ ধানে প্রায় ১০০ টাকা খরচ হয়েছে। যে ধান ৯০০ টাকা মণ দরে কিনেছি, সে ধান মোকামে ৮০০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। চালকল মালিকরা ধান নিতে চান না। বাধ্য হয়ে লোকসানে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।’ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত ধানের মোকামটি পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মোকাম হিসেবে পরিচিত। মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে এক লাখ মণ ধান বেচাকেনা হয় এখানে। বাকি সময় তা অর্ধেকে নামে। তবে সরবরাহ ঘাটতির কারণে মোকামে ধানের সংকট তৈরি হয়েছিল, যা প্রায় চার মাস স্থায়ী হয়। যদিও নভেম্বরের শেষ দিকে মোকামে নতুন ধান ওঠা শুরু করে। বর্তমানে পুরনো ধানের মধ্যে বিআর—২৯ ও হীরা ধান এবং নতুন বিআর—৩৯ ও বিআর—৪৯ জাতের ধান পাওয়া যাচ্ছে মোকামে। ধানের যে সংকট ছিল সেটি অনেকাংশেই কেটে গেছে। বর্তমানে আশুগঞ্জ মোকামে বিআর—২৯ জাতের ধান প্রতি মণ ১২৩০—১২৪০ টাকা ও হীরা ধান ১১৫০—১১৬০ টাকা দামে কেনাবেচা হচ্ছে। এছাড়া বিআর—৩৯ জাতের ধান মানভেদে ৮০০—৯০০ টাকা ও বিআর—৪৯ ধান কেনাবেচা হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকা দরে। তবে বাজারে চালের কেনাবেচা কম হওয়ার কারণ দেখিয়ে চালকল মালিকরা মোকাম থেকে ধান কিনছেন কম। বর্তমানে প্রতিদিন ১৫—২০ হাজার মণ ধান কেনাবেচা হচ্ছে মোকামে, যা অন্য মৌসুমের তুলনায় প্রায় ৮০ শতাংশ কম। তবে চালকল মালিকরা বলছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চালের বাজারেও। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের যেসব পাইকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চাল নিতেন তারা এখন চাল নিতে চাইছেন না। ফলে অধিকাংশ চালকলে প্রচুর চাল অবিক্রীত রয়ে গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. উবায়দুল্লাহ  বলেন, ‘এমনিতেই চালের বাজারের সঙ্গে ধানের বাজারের কোনো সমন্বয় নেই। এর মধ্যে চাল বিক্রি কমে যাওয়ায় প্রতিটা মিলেই প্রচুর চাল অবিক্রীত রয়েছে। চলমান হরতাল—অবরোধের পাশাপাশি সরকারিভাবে খোলা বাজারে চাল বিক্রির কারণেও বাজারে কেনাবেচা কমেছে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কি হয় না হয় সেটা নিয়ে পাইকারদের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা চাল নিচ্ছেন না। ফলে স্বাভাবিকভাবে চাল বিক্রি করতে না পারায় আমরাও মোকাম থেকে ধান কেনা কমিয়ে দিয়েছি।’ তবে নির্বাচনের পর যদি রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়, তাহলে ধান ও চালের বাজার আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে মনে করেন মো. উবায়দুল্লাহ।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!