AB Bank
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ফরিদপুরে চা বিক্রি করে জিপিএ ৫ পেলেন স্মৃতি


ফরিদপুরে চা বিক্রি করে জিপিএ ৫ পেলেন স্মৃতি

ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারীতে সংসার চালাতে চায়ের দোকানে কাজ করেন স্মৃতি আক্তার নামে বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ময়না গ্রামের এক ছাত্রী। স্মৃতি আক্তার এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছেন। এসএসসিতে ভালো ফলাফল করতে না পেরে এবার তিনি সংকল্প করেই অর্জন করেন কাঙ্ক্ষিত এই সাফল্য।

স্মৃতি বোয়ালমারীর কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের কারিগরি বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তার বাবা মো: হারুন শেখ একজন তাল গাছের কারবারি। তারা দুই বোন এক ভাই। বড় বোন মনিকা আক্তারও দারিদ্র্যতার সাথে সংগ্রামের পাশাপাশি ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স পাশ করেন।

ময়না বাজারের পাশেই স্মৃতিদের বাড়ি। আর বাড়ির পাশেই ছোট একটি মুদি দোকানের সাথে আয় বাড়ানোর জন্য চা বিক্রির একটা দোকান। স্মৃতি ও তার বোন মনিকা দুজনে পালাক্রমে নিজেরাই ওই দোকান চালান।

স্মৃতির মা আসমা আক্তার জানান, তার শ্বশুর প্রায় ৩০ বছর আগে বাড়ির পাশে মুদি দোকান করতেন। তিনি মারা যাওয়ার পরে তার স্বামী হারুন শেখ দোকান শুরু করেন। ছোটবেলা থেকে তাকে সহায়তা করতো মেয়েরা। তবে আয় উপার্জন তেমন একটা না হওয়ায় এ দোকান ছেড়ে তিনি তাল গাছ বেচাকেনার ব্যবসা শুরু করেন। এরপর পরিবারের অভাব দূর করতে বাবার বদলে দুই মেয়ে দোকান শুরু গ্রহণ করেন। দোকানের একপাশে গড়ে তোলেন ছোট একটি চায়ের স্টল।

স্মৃতি আক্তার বলেন, পরিবারের আয়ের পাশাপাশি পড়াশোনার খরচ জোগানোর জন্য তারা দু’বোন বাড়ির পাশে মুদি দোকানে চা বিক্রির কাজ করেন। প্রথম দিকে একটু সমস্যা হলেও এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে তারা। সারাদিনে চা বিক্রির পাশাপাশি সময় পেলেই পড়াশোনার করেন তারা।

তিনি বলেন, ‘রাতে যতটুকু সময় পাই কাজে লাগাই। এভাবেই আমরা দু’বোন পড়াশোনা করে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার পথ বেছে নিয়েছি। তবে অর্থের অভাবে ইচ্ছে থাকলেও কাঙ্ক্ষিত বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারি না।’

স্মৃতির ইচ্ছে ছিল চিকিৎসক হবেন। তবে মানবিক বিভাগ থেকে মেডিক্যালে ভর্তি হওয়া যায় না। তাই তিনি আরো উচ্চ শিক্ষা লাভ করে এমন একটি পেশায় নিবেদিত হতে চান যেখানে থেকে মানুষের সেবা করতে পারবেন।

স্মৃতির বাবা হারুন শেখ জানা, মেয়েদের এ সাফল্যে তারা খুবই আনন্দিত। এর আগে তার আরেক মেয়ে অনার্স পাশ করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেন। ওই টাকা অনেক ভূমিকা রাখে তাদের পড়াশোনার সাফল্যে। তার মেয়েদের উচ্চশিক্ষা লাভে বড় বাধা আর্থিক সঙ্কট। তা না থাকলে তারা আরো ভালো ফলাফল করতে পারতো।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো: বাচ্চু শেখ বলেন, মনিকা ও স্মৃতির এই সাফল্যের খবর জেনে তিনি তাদের বাড়িতে গিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পুরো গ্রামের মানুষ এ খবরে আনন্দিত। তিনি বলেন, ‘তারা পড়াশোনা করে আরো বড় হোক, এই কামনা করি।’


একুশে সংবাদ/স.চ.প্র/জাহা

Link copied!