AB Bank
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
মোবাইলে-মোবাইলে জমজমাট জুয়া

ফেসবুক-ইউটিউব-মেসেজিংয়ে রাতের বেশির ভাগ কিশোর কিশোরী


Ekushey Sangbad
টি আই সানি, শ্রীপুর, গাজীপুর
০৩:০৯ পিএম, ১৭ নভেম্বর, ২০২৩
ফেসবুক-ইউটিউব-মেসেজিংয়ে রাতের বেশির ভাগ কিশোর কিশোরী

ফেসবুক, ইউটিউব, মেসেজিং করে রাতের বেশির ভাগ সময় পার করে কিশোর তিশোরীসহ নানাবয়সের মানুষ প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে দিনের পর দিন রাতের পর রাত মোবাইল ব্যবহার করে কাটিয়ে দেয়া আমাদের কাছে একদম সহজ হয়ে গেছে। ফেসবুক, ইউটিউব, মেসেজিং করে রাতের বেশির ভাগ সময় পার করে দেয়া আমাদের প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া স্মার্টফোনের সুন্দর সুন্দর গ্রাফিক্স গেমস তো রয়েছেই, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের সময় টাকে আনন্দের সাথে কাটাতে পারি। কিন্তু এই গেম আর ডিজিটাল জুয়া কতটা ক্ষতির কারন তা কি কেও চিন্তা করতে পারে! এই গেম মাদকের চেয়েও বেশি ভয়াবহতা রয়েছে।

গাজীপুরের বিভিন্ন জায়গায় অবাধে চলছে এই লুডু,তিন পাতি,  Free Fire, Coc, Paboji, Free fiters  সহ অনেক খেলার নামে ডিজিটাল জুয়া। আর এই ডিজিটাল জুয়া খেলা রোধ করার মত কেউ নেই। বাজি হয় মুখে মুখে, অথবা সংকেতে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ছাত্র ও যুবকরাই বেশি মেতে উঠেছে এই মরণনেশা ডিজিটাল জুয়ায়। অর্থাৎ এই অ্যাপস বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনারা অন্য কারো সাথে লুডু, তিন পাতি, তাস, দাবা ইত্যাদি গেমস খেলে তাদের সাথে টাকা দিয়ে বাজি ধরতে পারেন! সাপোজ আপনি অন্য কারো সাথে লুডু খেলে ৫ টাকা বাজি ধরলেন, খেলে যে জিতবে সে পাঁচ টাকা পাবে! এছাড়াও আইপিএল, বিপিএল, বিশ্বকাপ ক্রিকেট, ফুটবল বিভিন্ন খেলা নিয়েও হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে বাজি ধরা হয়।

কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্র বুলবুল বলেন,আমি মাঝেমধ্যে এভাবে গেমস খেলি,এতে আমার সময়টা আরো আনন্দদায়ক হয় এবং সময় খুব ভালো কাটে। তবে আমি খুব বেশি টাকা বাজি ধরি না, সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ১০০ টাকা বাজি ধরি। এতে হারলেও আপনার তেমন খারাপ লাগবে না।
কালার মাষ্টার কারখানার এক শ্রমিক সোহাগ মিয়া বলেন, অনেকেই রয়েছে যে ওয়েবসাইট বা এপস এর সাথে যেখানে অনেক কোটিপতির ছেলে মেয়েরা লক্ষ লক্ষ টাকা বাজি ধরে। যাই হোক বড় বড় লোকের বড় বড় ব্যাপার, আমরা কম টাকা বাজি ধরে খেলা করি।


সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর জেলার প্রায় সব পাড়া-মহল্লা, চায়ের দোকান, পথে-ঘাটে ও প্রত্যন্ত অঞ্চলেও চলছে লুডুর জমজমাট জুয়ার ও মোবাইলের মাধ্যমে জুয়ার আসর। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সেটে লুডু ও গেমস্ এর সফটওয়্যার ডাউনলোড করে রাত-দিন যেখানে সেখানে ৪-৫ জন জুয়ারি একটি মোবাইলে লুডু খেলছে এবং রাতে বিছানায় গিয়ে যার যার মতো গেমস্ সফটওয়্যারের মাধ্যমে জুয়া খেলে রাত পার করে দিচ্ছে। জৈনা বাজার নামাবাজার এলাকায়,কাচাঁ বাজারসহ বিভিন্ন চায়ের দোকানের ভিতর দিনরাত চলছে এই লুডু বাজি। এছাড়া পৌর এলাকার বিভিন্ন চায়ের দোকান ও রেস্টুরেন্টে সন্ধ্যা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত এই খেলায় মত্ত থাকে বেশিরভাগ কিশোর, যুবক,কারখানার শ্রমিক, স্কুল ছাত্র, এমনকি বয়স্করাও খেলে এই খেলা।


গাজীপুর থেকে সিমান্ত পর্যন্ত সরেজমিনে একাধিক স্থানে খেলতে দেখা যায় এই জুয়াড়িদের। এসব জুয়াড়ির মধ্যে উল্লেখযোগ্য রিকশা, ভ্যান, অটো, ট্রলি, কাকড়া গাড়ি, ক্ষেতখামারে কাজ করা শ্রমিক,কারখানার শ্রমিক, দোকান কর্মচারী এবং স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, প্রতিদিন শুধু পৌরসভার ভিতরেই লাখ লাখ টাকার মোবাইল লুডুতে জুয়া খেলা হয়। তবে সম্প্রতি গাজীপুরে অ্যান্ড্রয়েড মুঠোফোন দিয়ে লুডু খেলা (জুয়া) ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। চার পরিবারের চারজন, সাথে আরও দু-চারজন পরামর্শকসহ লুডু দিয়ে চলছে জুয়া খেলা।এসব লুডু বাজিতে অনেকেই আসক্ত হয়েছে। এ কারণে অনেকের পরিবারে প্রতিদিন ঝগড়াঝাঁটি লেগেই আছে। পৌর পার্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক জানান, শখ করে একদিন ৫শ’ টাকা বাজি ধরেছিলাম, সেই টাকা তুলতে গিয়ে এই খেলার নেশা হয়েছে।


চা দোকানদার আসাদ মিয়া বলেন, মোবাইল এখন অনেকটা আমাদের প্রয়োাজনীয় বস্তুর মতো। তাই বড়দের মতো শিশুরাও মোবাইল ব্যবহার করে এবং এর ভালো দিকগুলো না জেনে বুঝে, এটা ব্যবহার করা আমাদের কাম্য নয়। শুধু মোবাইলে কেবল গেম খেলে শিশু সময় নষ্ট করছে না,পড়া লেখার অনেক ক্ষতি করছে এটা মোটেও ভালো দিক নয়। মাওনা এলাকার ইমরান জানান, প্রতিদিন এই লুডু খেলেন বন্ধুবান্ধব মিলে। তবে টাকা দিয়ে না খেলে তারা খাবার বাজি ধরেন। সময় সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা নিয়ে সত্যিই ঝামেলা হয় পরিবারে।


এভাবেই লুডু বাজি আর খেলায় দীর্ঘসময় মগ্ন থাকতে জুয়াড়িরা ব্যবহার করছে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক। ফলে গাজীপুরে বেকার ও মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং এই লুডু বাজি প্রতিরোধের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন গাজীপুরের সচেতন মহল।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!