AB Bank
ঢাকা বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

উজিরপুরে নদীভাঙনে শঙ্কায় কাটছে দিন, নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে মানুষের স্বপ্ন


Ekushey Sangbad
বি এম রবিউল ইসলাম, উজিরপুর, বরিশাল
০১:১২ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
উজিরপুরে নদীভাঙনে শঙ্কায় কাটছে দিন, নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে মানুষের স্বপ্ন

বরিশালের উজিরপুরে মনির মৃধা (৬০) বসতভিটা থেকে প্রায় ৩ মিটার দূরে চলে এসেছে সন্ধ্যা নদীর ভাঙন। যেকোনো সময় তার বসতভিটা নদীতে বিলীন হতে পারে। এই দুশ্চিন্তায় গত রবিবার থেকেই নির্ঘুম রাত কাটছে পরিবারের ৬ সদস্যের। আশেপাশে সকল  বাড়িঘর সন্ধ্যা নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

 

উপজেলার বরাকোঠা ইউনিয়নের নারি কেলি গ্রামের মনির মৃধা মতোই নির্ঘুম রাত কাটছে আদম আলী (৬৪) ও তার পরিবারের ১৩ সদস্যের। কালু মৃধা বসতভিটা থেকে সন্ধ্যা  নদীর ভাঙনের দূরত্ব এখন ৪ মিটার।

 

কৃষক মনির মৃধা মঙ্গলবার (৫সেপ্টেম্বর) জানান, তার জীবনে ৭ বার বসতভিটা হারিয়েছেন সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে। এখন এই বসতভিটায় বসবাস করছেন গেল ১৩ বছর ধরে। এ বসতভিটাও সন্ধ্যার উদরে চলে যেতে পারে যেকোনো সময়।

 

‍‍`নদীভাঙনে বসতভিটা বিলীন হওয়ার ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারছি না। এ বসতভিটা নদীর উদরে চলে গেলে ভূমিহীন ও গৃহহীন হয়ে পড়ব। চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হবে।

 

কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, তার জীবনে তিনি ৯ বার বসতভিটা হারিয়েছিলেন। সর্বশেষ বসতভিটায় বসবাস করছেন গেল ১০ বছর ধরে। এ বসতভিটাও যেকোনো মুহূর্তে চলে যেতে পারে সন্ধ্যার উদরে।

 

‍‍`জমি কিনে নতুনভাবে বসতভিটা তৈরির সামর্থ্য আমার নেই। সন্ধ্যা  নদীর ভাঙন আমাকে নিঃস্ব করেছে‍‍`, বলেন তিনি।

 

সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন সফল নজরুলসহ গ্রামবাসী। বড়াকোঠা  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম  জানান, তার ইউনিয়নের নারি কেলি এলাকায় সন্ধ্যা  নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গেল ৫ দিনে পেরায় চার  বিঘা আবাদি জমি নদীর উদরে বিলীন হয়েছে।  ওই গ্রামে দেড় শতাধিক বসতভিটা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও নেওয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা।

 

নারি কেলি গ্রামের জাকির মৃধা  (৪০) জানান, তাদের গ্রামে সন্ধ্যা  নদীর ভাঙনে আবাদি জমি চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে। ভাঙন হুমকিতে পড়েছে অর্ধশতাধিক বসতভিটা। যেকোনো সময় নদীভাঙনে বসতভিটা চলে যেতে পারে সন্ধ্যার উদরে। এজন্য তাদেরকে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে।

 

কৃষক আদম আলী মৃধা (৬৫)  বলেন, ‍‍`সন্ধ্যা  নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গেল শুক্রবার থেকে দশ পরিবারের ভিটেবাড়ি  আবাদি জমি চলে গেছে সন্ধ্যা  উদরে। ভাঙন হুমকিতে থাকায় তিনি বসতভিটা থেকে ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিরাপদে নিয়ে গেছেন। অনেকে ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন।‍‍`

 

গ্রামের লোকজন বসতভিটা হারিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন সরকারি রাস্তার ওপর ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। গেল ২ সপ্তাহ ধরে এই গ্রামে সন্ধ্যা  নদির ভাঙন চলছে‍‍`, বলেন ওই এলাকার  কৃষক আব্বাস মৃধা (৬০)।

 

পাউবো সূত্র জানায়, সন্ধ্যা  নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে ১২টি পয়েন্টে।

 

উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিয়া তানজিন বলেন, ‍‍`সন্ধ্যা  নদীপাড়ের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে ।‍‍`

 

বরিশাল জেল পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.রাকিব হোসেন বলেন, ‍‍`তহবিলের অভাবে ভাঙনকবলিত সবগুলো স্থানে ভাঙন ঠেকানোর কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলে ভাঙন ঠেকানোর কাজ চলছে।‍‍`

 

একুশে সংবাদ/র.ই.প্র/জাহা

Link copied!