পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কলাপাড়া উপজেলা, কলাপাড়া পৌর এবং সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১০ জুলাই) রাত সাড়ে এগারোটায় পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান আরিফ এর স্বাক্ষরিত আলাদা আলাদা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কলাপাড়া উপজেলায় হাসিবুল হাসানকে সভাপতি ও বাবু তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক, পৌরসভায় রাকিবুল হাসান রাব্বিকে সভাপতি ও রাকিবুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারি কলেজ শাখায় জসিম উদ্দিন জিতুকে সভাপতি ও মিজানুর রহমান মুসাকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য আংশিক কমিটি ঘোষণা করে।
তবে কমিটি ঘোষণার পরপরই বিতর্কিত, অসাংগঠনিক ও বিনএপি পরিবারের লোকদের দিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে। কেউ কেউ বলছেন মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিতর্কিত এবং বিএনপি পরিবারের লোকদের কমিটিতে স্থান দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগ।
ফলে এক ঘন্টার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সব কমিটি সাময়িক ভাবে স্থগিত করা হয়।

প্রথমে কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশিক তালুকদার কমিটি বাবদ দেওয়া টাকার বেশ কয়েকটি ছবিসহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তিনি তার ফেসবুক পোষ্টে লিখেছেন, ‘জেলা ছাত্রলীগ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যে টাকাগুলো নিয়েছেন ফেরত দেন, নাইলে গনভবনে যাবো বাকি ডকুমেন্ট নিয়ে।’
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর আশিক তালুকদার তার মোবাইলে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলামের কাছে টাকা ফেরত চেয়েছেন- এমন একটি অডিও রেকর্ডও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
টাকা নিয়ে কমিটি দেওয়া প্রশঙ্গে আশিক তালুকদার বলেন, “আমি ক্যান্ডিডেট হতে চাইনি, যেহেতু আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এরপরও জেলা সভাপতি সাইফুল ইসলাম আমাকে ক্যান্ডিডেট হতে বলে। বিভিন্ন সময় সে বিভিন্ন অজুহাতে ২০ হাজার, ৩০ হাজার এমনকি পাঁচ হাজার টাকা করেও নিয়েছে। ধাপে ধাপে আমার কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়েছে। তার এক খালাতো ভাই এর মাধ্যমেও টাকা নিয়েছে।”

তিনি বলেন, “সর্বশেষ কোরবানির চার থেকে পাঁচ দিন আগে আমাকে ফোন করে বলে কমিটি দেওয়া হবে, কি করলি। আমার কাছে সে ২০ লাখ টাকা চাইলে আমি বলি ভাই এত টাকা কিভাবে দিব। পরে আমি তাকে ১৫ লাখ টাকা দেই। পটুয়াখালী নেছারিয়া মাদরাসার দিকে যেতে হাতের ডানে খান মোশারেফ হোসেনের বাসার সিঁড়িতে বসে সে আমার কাছ থেকে টাকা নেয়।”
তিনি আরো বলেন, “১৫ লাখ টাকার মধ্যে পঞ্চাশ হাজার টাকার বান্ডিল ছিল ১২ টা, পাঁচশ এবং এক হাজার টাকার মিলিয়ে একটি বান্ডিলে ছিল এক লাখ টাকা এবং বাকিগুলো ছিল এক হাজার টাকার বান্ডিল।”
পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে গণমাধ্যমে বলেন, “এসব অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা হচ্ছে। আশিক তালুকদার যে ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন সেটি সত্য নয়, ছবিতে আশিকের বিছানার চাদরও দেখা যাচ্ছে। কল রেকর্ডের ব্যাপারে কিছুই জানিনা আমি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটি স্থগিত করার কারণ জানতে চাইলে সাইফুল বলেন, “সে সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা কেন্দ্রীয় কমিটির হাতে। আমাদের এখনো জানানো হয়নি।”
একুশে সংবাদ/ই/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :