AB Bank
  • ঢাকা
  • বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

রাস্তায় শুকানো হচ্ছে ধানের খড়, প্রায়ই ঘটেছে দুর্ঘটনা



রাস্তায় শুকানো হচ্ছে ধানের খড়, প্রায়ই ঘটেছে দুর্ঘটনা

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় এখন চলছে বোরো ধান মাড়াইয়ের মৌসুম। এ মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন পাকা সড়কের ওপর শুরু হয়ে যায় ধান মাড়াই আর খড় শুখানোর কাজ। এরপর সড়কের দুই পাশে স্তুপ করে রাখা হয় ওইসব শুকানো খড়। এমন দৃশ্য এখন অহরহ চোখে পড়ছে কালাই উপজেলার প্রতিটি আঞ্চলিক সড়কে।

 

উপজেলার প্রায় ছোট-বড় প্রতিটি সড়কে কম/বেশি- ৫/৮ জনের বেশি কৃষাণ-কৃষাণি ধান শুকাচ্ছেন। আর এ ধান শুকানোর কাজে সহযোগিতা করছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। তারা সাথে নিয়ে আসছেন পরিবারে থাকা ছোট শিশুদের। এতে করে ওইসব সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।সড়কের বর্তমান এই দুরাবস্থার কারণে বাড়ী থেকে বের হলে মনে হয় না যে, সুস্থ অবস্থায় বাড়ী ফিরতে পারবেন কেউ! এমন প্রশ্ন তুলেছেন রাস্তায় যান চলাচলকারী অনেক চালক ও পথচারীরা।

সরেজমিনে কালাই উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ছোট-বড় সড়কগুলো ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা মাঠ থেকে ধান কেটে রাস্তার উপর স্তুপ করে রাখছেন। অনেক স্থানে সড়কের উপরই চলছে,ধান মাড়াই-এর উৎসব। ধান মাড়াই করার পরও, শেষ হচ্ছে না এই যন্ত্রনা। এরপর খড় রাস্তায় বিছিয়ে শুকানো হচ্ছে দিনের পর দিন। এর ফলে এসব কালো পিচের সড়ক এখন সোনালী রং ধারণ করেছে। চরম আতংক আর ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে পথচারীসহ সব ধরনের যানবাহনকে। খড়ের কারণে সাইকেল-মোটরসাইকেলসহ যানবাহন পিছলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে ভ্যান,টেম্পো,অটো রিকশা,সিএনজি, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল আরোহীরা।

 

কালাই পৌরসভার ০৯ ওয়ার্ডের বাসিন্দা জমিরউদ্দীন মন্ডল রাস্তার উপর খড় শুকাচ্ছিলেন। রাস্তার উপর কেন খড় শুকাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন খোলা জায়গা না থাকায় ধান, খড় এগুলো শুকানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অথচ সময়মতো শুকাতে না পারলে ধান নষ্ট হয়। তাই পাকা রাস্তার ওপরই ধান শুকাতে হচ্ছে। তা ছাড়া সড়কে এসব শুকাতে সময়ও কম লাগে। তবে পথচারীদের চলাচলে সমস্যার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, একটু দেখে শুনে গেলেই আর সমস্যা হবে না।

 

আঁওড়া গ্রাম থেকে বাইগুনীর চৌরাস্তার মোড় পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কের ওপর ধানমাড়াই করছিলেন কৃষক জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, আগে তো ধান মাড়াইয়ের জন্য বাড়ির উঠানে অনেক খোলা জায়গা ছিল। এখন আর নেই। তাই গ্রামের প্রায় সবাই বাধ্য হয়েই এভাবে রাস্তার ওপরে ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর কাজ করছে।

 

উপজেলার পুনট হাট থেকে পাঁচগ্রাম যাওয়া মজিবুর রহমান নামে এক পথচারী বলেন,গ্রামের কৃষকেরা পুরো সড়কটি দখলে নিয়ে মাঠ থেকে ধান কেটে সরাসরি সড়কের ওপর পালা করে রাখছেন। এরপর চলছে যন্ত্র দিয়ে ধান মাড়াইয়ের কাজ। ধান মাড়াই শেষে সড়কজুড়ে ধান ও খড় শুকানো হচ্ছে। এতে সড়কটি এখন সরু সড়কে পরিণত হওয়ায় সেই সরু সড়কের ফাঁক ফোঁকড় দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

 

বৈরাগীহাট থেকে পাঠানপাড়া হাটের দিকে যাওয়ার রাস্তায় মোটরসাইকেল চালক মোঃ তৈবর আলি বলেন,নিয়ম-কানুন তোয়াক্কা না করে সড়ক বন্ধ করে সড়কের উপর খড় শুকাচ্ছে স্থানীয় কৃষক-কৃষানীরা। সড়ক গুলো দেখলে মনে হয় চলাচলের জন্য সড়ক নয় এ যেন ধান ও খড় শুকানো ব্যক্তিদের পৈত্রিক সম্পত্তি।

সিএনজি চালক আজিজার,তুহিন মিয়া,মোঃ আলম এবং সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, এসব পাকা সড়কপথে অনবরত চলছে ট্রাক, সিএনজি, মোটরসাইকেল ছাড়াও রিক্সা-ভ্যান এবং ইজিবাইক। চালকরা সর্বক্ষণ দুর্ঘটনার আতঙ্কের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে। অনেক সময় সিএনজিগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। ফলে ভয়ে ভয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে।আমাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যায়। মোট কথা প্রশাসনের জ্ঞাতসারেই চলছে পাকা সড়কে যানবাহন চলাচলে চরম অসুবিধা সৃষ্টি করে এবং দুর্ঘটনার যথেষ্ট আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও এই বেআইনি কাজ।

 

কয়েকজন ট্রাকচালকের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, আগের মতো মানুষ আর ফাঁকা জায়গায় ধান ফেলে না রেখে সড়কে রাখছে। এবং সড়কেই কৃষকরা ধান কাটা মাড়াই করে খড় শুকানোর কাজ সড়কেই সারছে। ফলে আমাদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে ধান বস্তাবন্দি করে নিয়ে আসতে প্রচন্ড বেগ পোহাতে হচ্ছে। গাড়ি চালানোর সময় একটু অমনোযোগী হলেই দুর্ঘটনা ঘটবে। তাছাড়া ধান শুকানোর কারণে পুরো পরিবার চলে এসেছে রাস্তার ওপর।

 

এ বিষয়ে কালাই উপজেলার সচেতন নাগরিক মনে করেন, ‘রাস্তায় ধান মাড়াই ও শুকানোটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।রাস্তায় ধান মাড়াই ও খড় শুকানোয় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে ভ্যান, রিকশা, মোটরসাইকেল আর অটোরিকশাগুলো।এই জনদুর্ভোগ নিরসনে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

 

প্রতি বছর কৃষকরা যানচলাচলের রাস্তা দখল করে ধান কাটা-মাড়াই করে এমন প্রশ্নের জবাবে কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘রাস্তা আটকে যাতে কেউ যানচলাচলে বাধা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

একুশে সংবাদ/এসএপ

Shwapno
Link copied!