AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সচিবের স্বাক্ষর জাল, টাকা উত্তোলন করলেন ইউপি চেয়ারম্যান


Ekushey Sangbad
রেজোয়ান ইসলাম, নীলফামারী
১২:০৮ পিএম, ২৪ মে, ২০২৩
সচিবের স্বাক্ষর জাল, টাকা উত্তোলন করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সচিবের স্বাক্ষর জাল করে প্রকল্পের টাকা উত্তোলন ও কাজ না করে তিন বছর আগের দুইটি প্রকল্প দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

 

এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের(দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন মীর নিক্সন নামে এক ব্যক্তি। এছাড়াও স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন একই ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মো. মাহাবুব রহমান।

সূত্রমতে জানা গেছে, উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সামছুল হক তার ইউনিয়নের দুই ইউপি সদস্যকে প্রকল্প কমিটির সভাপতি বানিয়ে কাজ না করে তিন বছর আগের দুইটি প্রকল্প পাঁচ লক্ষ চুয়ান্ন হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের যে কোন প্রকল্পের বরাদ্দ উত্তোলনে চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিবের স্বাক্ষরের প্রয়োজন থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সামছুল হক তা না করেই তিন বছর আগের দুইটি প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেন।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সামছুল হক ২০২২-২৩ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের প্রথম কিস্তি হতে বরাদ্দকৃত দুইটি প্রকল্পের জন্য ৪ লক্ষ ৩৩ হাজার চারশত টাকা বরাদ্দ পান। এরপর চেয়ারম্যান তাঁর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য সফিকুল ইসলাম ও ৪নং ওয়ার্ড সদস্য সাহাবুল আলমকে প্রকল্প কমিটির সভাপতি দেখিয়ে পুরোনো তিন বছর আগের দুইটি প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করে সমুদয় টাকা আত্মসাত করেন। এছাড়া উপজেলা পরিষদ হতে প্রাপ্ত ভূমি রেজিস্ট্রেরীর এক শতাংশের এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা সহ ৫ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাত করেন তিনি। এ বিষয়ে ইউপি সচিব গয়াবাড়ী ইউনিয়ন মাহবুল আলম নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষের কাছে কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

 

অভিযোগে বলা হয়, ভূয়া প্রকল্প দুটির মাঠে কোন অস্তিত্ব নেই। এরপরেও চেয়ারম্যান সামছুল হক গত ঈদ উল ফিতরের আগে ইউপি সচিবের স্বাক্ষর জাল করে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ডিমলা শাখা টাকা উত্তোলন করেছেন। এছাড়াও চেয়ারম্যান সামছুল হক ভিজিডি কার্ড, বয়স্ক ভাতা, মাতৃভাতা, ভিজিএফের চাউল বিক্রিসহ অনেক টাকা আত্মসাত করেছেন।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গয়াবাড়ী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাউয়াধনী পাড়া এলাকার দক্ষিণ গয়াবাড়ী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মৃত চয়নুদ্দিনের বাড়ীর সামনে রাস্তায় পুকুরের প্লাসাইডিং নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখানো হয়। কিন্তু সরেজমিনে ওই প্রকল্পের কোন অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি। একই ঘটনা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ফুটানিরহাট এলাকার হামিদুলের বাড়ির কাছে রাস্তায় ইউড্রেন নির্মাণ নিয়েও।

 

মৃত চয়নুদ্দিনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন সাঈদী একুশে সংবাদকে বলেন, আমার বাড়ির সামনে পুকুর পাড়ে রাস্তায় কোন প্লাসাইডিং নির্মাণ করা হয়নি। তবে রাস্তা ধসে গেলে এখানে কয়েক টলি মাটি-বালু দিয়েছিল এর থেকে বেশী কিছু করে নি।

 

গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. মাহাবুব আলম একুশে সংবাদকে বলেন, চেয়ারম্যান সাহেবের অনুমতি নিয়ে তিনদিনের চিল্লায় ছিলাম। তবুও অফিসের নানান কাজ করেছি। এ সময়ের মধ্যে উপজেলা পরিষদ হতে প্রাপ্ত ভূমি রেজিস্ট্রেরীর এক পার্সেন্টের ১ লক্ষ টাকা ও যে প্রকল্পের কোন অস্তিত্বই নেই সে প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের কোন প্রকল্পের অর্থ উত্তোলনে চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিবের স্বাক্ষরের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে উক্ত অর্থ উত্তোলনে আমি কোন স্বাক্ষর দেইনি। চেয়ারম্যান সামছুল হক আমার স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন করেছেন। এ ঘটনায় আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি আশাবাদী সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন হবে ও কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এরকম অসাদুপায়ে অবলম্বন করতে না পারে।

 

দুদকে অভিযোগকারী মীর মিকছন একুশে সংবাদকে বলেন, হামিদুলের বাড়ীর সামনে ইউড্রেন কয়েক বছর আগের প্রকল্প। আর চয়নুদ্দিনের বাড়ীর সামনে তো কোন প্লাসাইডিং নির্মাণেই হয়নি। চলতি বাজেটে উক্ত প্রকল্প দেখিয়ে ও ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের টাকা সচিবের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে চেয়ারম্যান উত্তোলন করেন। ওই প্রকল্পের কোন অস্তিত্বই নেই।

 

তিনি আরও বলেন, ভিজিডি কার্ড, বয়স্ক ভাতা, মাতৃভাতা, ভিজিএফ এবং চাউল বিক্রিসহ নানা প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতে চেয়ারম্যান সম্পৃক্ত। আমি এলাকার উন্নয়ন চাই। এজন্য

 

প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. সাহাবুল আলম একুশে সংবাদকে বলেন, প্রকল্প আছে। যখন অডিট আসবে তখন সরেজমিনে দেখাব। এরপর সাক্ষাতে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

 

আরেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

 

এ বিষয়ে গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকায় আছেন বলে জানান ইউপি সচিব মাহাবুব আলম।

 

পরে মুঠোফোনে চেয়ারম্যান সামছুল হককে একাধিক কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসক (ডিসি) পঙ্কজ ঘোষ একুশে সংবাদকে বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

একুশে সংবাদ/র.হ.প্র/জাহাঙ্গীর

Link copied!