AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

জাল জালিয়াতের দায়ে কারাগারে আইনজীবী


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি,জয়পুরহাট
০১:১৯ পিএম, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২
জাল জালিয়াতের দায়ে কারাগারে আইনজীবী

জয়পুরহাটে জাল জালিয়াতি করে আসামীর জামিন করার দায়ে আইনজীবী আনিছুর রহমানসহ ৬ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় আইনজীবী স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করিয়া জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।

 

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এর দায়িত্বরত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নীশিথ রঞ্জন বিশ্বাস এ আদেশ দেন।

 

এসময় এজলাসে কয়েকজন আইনজীবি জামিনের তীব্র বিরোধিতা হট্টগোল শুরু করেন। তবুও আদালত পূর্বে আদেশ বহাল রাখেন। পরে পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় ওই আইনজীবিকে জেল হাজুতে নিয়ে যান।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে জয়পুরহাট সদর উপজেলার হিচমীতে অবস্থিত বিজলী ফিড মিলের মালিক আমানুল্লাহ-একই এলাকার মের্সাস ফিরোজা ট্রের্ডাসের মালিক সোহেল রানার কাছে ব্যবসায়িক লেনদেনের ২৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা পান। ওই বছরে ১৮ অক্টোবর ব্যবসায়ী আমানুল্লাহ ওই চেকটি ইসলামী ব্যাংক জয়পুরহাট শাখায় জমা দেন। ব্যবসায়ী সোহেল রানার মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে উল্লেখিত পরিমান টাকা জমা না থাকায় ওই চেকটি প্রত্যাখ্যান হয়। ওই বছরের ৬ নভেম্বর ব্যবসায়ী সোহেল রানাকে টাকা পরিশোধের ৩০ দিন সময় সীমা দিয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়। লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পরও সোহেল রানা টাকা পরিশোধ করেননি। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি আমানুল্লাহ বাদি হয়ে সোহেল রানার বিরুদ্ধে আদালতে চেক প্রত্যাখান মামলা করেন। নিয়ামুযায়ী চেক প্রত্যাখান মামলায় দাবিকৃত অর্ধেক টাকার জমা দিয়ে জামিন আবেদন করতে হয়। ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বরে ১৪ লাখ ৮ হাজার টাকার সোনালী ব্যাংকের নম্বর-৮৩ একটি চালান আসামির জামিন আবেদনের সঙ্গে দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা আদালতে জমা দেওয়া হয়। এরপর আদালত আসামি সোহেল রানার জামিন দেন। মামলার বিবাদি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আনিছুর রহমান।

 

সোহেলের জামিনের পর বাদি আমানউল্লাহ তার আইনজীবী গোলাম মোকারম চৌধুরীর কাছে এসে চালান মূলে ব্যাংকে টাকা জমা হয়নি বলে জানান। এরপর বাদির আইনজীবী মোকারম হোসেন চৌধুরী ট্রেজারিতে খোঁজ নিয়ে চালান জালিয়াতির সত্যতা পান। তিনি বিবাদী পক্ষের আইনজীবী আনিছুর রহমানকে জানান। তিনিও খোঁজ নিয়ে ব্যাংক চালান জালিয়াতির সত্যতা পান।

 

এরপর আইনজীবী আনিছুর রহমান বাদি হয়ে তিন জন নামীয়সহ অজ্ঞাত ৪-৫ জন আসামি করে জয়পুরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরির্দশক (এসআই) আমিরুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন।

 

এ মামলায় আসামি সোহেল রানার বড় আব্দুল করিম, তার বোন পারুল বেগম এবং নসু বাবু নামের এক দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আমিরুল ইসলাম তথ্যগত ভুল দেখিয়ে মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন এবং চেক প্রত্যাখ্যান মামলা ব্যাংক চালান জালিয়াতির ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের এস আই আমিরুল ইসলাম বাদি হয়ে চলতি বছরের ৮ নভেম্বর জয়পুরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আইনজীবী আনিছুর রহমানসহ ছয় জনকে আসামি করা হয়। তবে আগের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আব্দুল করিমকে এ মামলায় আসামি করা হয়নি।

 

সোমবার (০৫ ডিসেম্বর) দুপুরে মামলার আসামি আইনজীবী আনিছুর রহমান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এর দায়িত্বরত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নীশিথ রঞ্জন বিশ^াসের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তখন আদালতে থাকা আইনজীবীরা একত্রিত হয়ে হট্টগোল করেন। একপর্যায়ে আদালত উত্তপ্ত হয়ে উঠে। তখন থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে এসে আসামি আনিছুর রহমানকে কড়া নিরাপত্তায় কারাগারে নিয়ে যায়।

 

এ ব্যাপারে জয়পুরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহনুর রহমান শাহীন বলেন, এ ঘটনায় আইনজীবীর জামিন আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছি এবং দশ মিনিট পর আসামিকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই সময়ে আমরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে কথা বলেছি। তিনিও একই কথা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে আজ (৬ ডিসেম্বর) একটি মিটিং করা হবে তিনি বলেন।

 

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম জানান, আসামিদের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে ব্যাংকের চালান জালিয়াতির ঘটনার সঙ্গে আইনজীবীর আনিছুর রহমানসহ ৬জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ওই আইনজীবি আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমপূর্ণ করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই আইনজীবিকে জামিন না দেওয়ায় কয়েকজন আইনজীবি হট্টগোল করলে আদালতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখা দেয়। পরে আসামী আনিছুর রহমানকে কাঠগড়া থেকে কড়া নিরাপত্তায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

একুশে সংবাদ.কম/ম.র.প্র/জাহাঙ্গীর

Link copied!