জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র ছাত্রী হল নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের ক্যান্টিনের খাবারে পোকা পাওয়া নিয়ে পোস্ট দেওয়ার জেরে এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে ইসলামী ছাত্রীসংস্থার নেত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা ইমুর বিরুদ্ধে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং আসন্ন জকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রীসংস্থার প্যানেল থেকে ভিপি পদপ্রার্থী।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে বরবটি-আলু ভাজিতে পোকা পেয়ে সমাজকর্ম বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী উম্মে মাবুদা প্রমাণসহ পোস্ট দিলে তা মুহূর্তেই হলে আলোচনায় উঠে আসে। পরে ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে মাবুদার ওপর ‘রাজনীতি করার’ অভিযোগ তুলে চড়াও হন ছাত্রীসংস্থার এই নেত্রী ইমু।
মাবুদা বলেন, “জুনিয়র একজন আমাকে খাবারে পোকা পাওয়ার বিষয়টি জানায়। মিড থাকায় সে পোস্ট দিতে পারেনি। তাই আমি প্রমাণসহ দিয়েছি। এরপরই ইমু আমাকে পোস্ট মুছে ফেলা ও ক্ষমা চাওয়ার চাপ দেয়।”
ইমুর দাবি, ওই শিক্ষার্থী খাবারের বিষয়টিকে ‘ভোট রাজনীতি’তে টেনে এনেছেন। তিনি বলেন, “হ্যাঁ, ক্যান্টিনের খাবারে মাঝে মাঝে পোকা পাওয়া যায়। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরও এমন হয়েছে। কিন্তু পোস্টদাতা দুই জায়গায় দুই কথা বলে ইস্যুটা ভোটে টেনে এনেছে।”
মাবুদার অভিযোগ, ইমু তাকে বারবার চাপ দিয়েছেন এবং শেষ পর্যন্ত ৬ নভেম্বর সকালে হলের রুমে গিয়ে জবাবদিহি চান। “তিনি আমাকে বলেন, ‘এখনই গিয়ে ক্ষমা চাও এবং আগের পোস্ট ভুল ছিল বলে পোস্ট দিবি। বাজে পোস্ট করে আমার জকসুর ভোট নষ্ট করার কথা ভাবতেছিস নাকি?’”— দাবি মাবুদার।
এদিকে হলে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ— খাবারের মান নিয়ে কথা বললেই ইমু ক্যান্টিনের পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন। প্রভোস্টের সঙ্গে সহবৎ সম্পর্ক ও দায়িত্বে থাকার কারণে তারা ভয় পান মুখ খুলতে।
মাবুদার পোস্টে সমর্থন জানিয়ে একই ব্যাচের শিক্ষার্থী সন্ধী মন্তব্য করেন, “পুরো বিষয়টা খেয়াল করে দেখলাম তাঁর ফোকাস খাবারে নয়ই। উনি আছেন তাঁর ভোট নিয়ে। ভালো কিছু বললেই নোংরা পলিটিক্স ঢুকে যায়।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আঞ্জুমান আরা বলেন, “যদি ইমু তাকে ফের পোস্ট করে মাফ চাইতে বলে, তাহলে ইমুকেও মাফ চাইতে হবে। খাবারের মানও গত এক মাস খারাপের দিকে। আমি দ্রুতই নোটিশ দেব এবং রোববার বসে ব্যবস্থা নেব।”
তিনি আরও বলেন, “ইমু আমার কাছ থেকে পদার্থবিজ্ঞানের হিসাবে কোনো বাড়তি সুবিধা পায় না। ডিবেটিং সোসাইটির সদস্য হিসেবে সুযোগ পায়। জকসুতে শিক্ষার্থীরা যাকে চাইবে সেই আসবে।”
এদিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশ্ন, ছাত্রীসংস্থার প্যানেল ভিপি প্রার্থী হওয়ার পরও যদি খাবারের মান নিয়ে প্রতিবাদ করলে এমন হেনস্তা হয়, তাহলে নির্বাচনের পর হলে কি আরও ‘নীরব অত্যাচার’ চলবে?
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

