AB Bank
  • ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ইবি শিক্ষার্থীর রহস্যময় মৃত্যু, তদন্তে কমিটি গঠন



ইবি শিক্ষার্থীর রহস্যময় মৃত্যু, তদন্তে কমিটি গঠন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাহ আজিজুর রহমান হলের সামনের পুকুর থেকে সাজিদ আব্দুল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৬ টার দিকে ইবি থানা পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই ক্যাম্পাস জুড়ে দানা বেঁধেছে রহস্য, উঠেছে নানা প্রশ্ন। এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক মনে করছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এদিকে শুক্রবার দুপুরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল এলাকায় মৃতের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে লাশবাহী গাড়ি আটকিয়ে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। 

পরে প্রশাসনের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের লিখিত আশ্বাস দিলে গাড়ী ছাড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এদিকে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে হল প্রশাসন থেকেও তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ক্যাম্পাসের পুকুরে একটি মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ইবি থানা পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে মরদেহ উদ্ধারের পর ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও পুলিশকে জানালেও তারা ঘটনাস্থলে অনেক দেরিতে পৌঁছায় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্সে ফোন দিলেও প্রায় আধা ঘন্টা পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ওই শিক্ষার্থীর শহীদ জিয়াউর রহমান হল গেটের সিসিটিভি ক্যামেরা অচল থাকায় এ সংক্রান্ত কোনো ধরনের ফুটেজ পাওয়া যায়নি। এদিকে সুরতহাল রিপোর্ট থেকে জানা যায়, পুকুর থেকে লাশ উদ্ধারের সময় তার নাক থেকে রক্ত ঝরছিল। এছাড়া বাম হাতের কব্জির উপরে ও ডান পায়ের হাঁটুর নিচে চামড়া ছেলা আঘাতের চিহ্ন ছিল। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাজিদ সাঁতার জানা সত্ত্বেও পুকুরে ডুবে মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক। এর পেছনের কারণ উদঘাটনে সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন। এছাড়া ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বিভাগ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গভীর শোক প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন পৃথক বিবৃতিতে শোক এবং মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের দাবি জানান।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন। অন্য সদস্যরা হলেন, শাহ আজিজুর রহমান হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ টি এম মিজানুর রহমান, লালন শাহ হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. গাজী আরিফুজ্জামান খান, আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. খাইরুল ইসলাম। হল প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হলেন প্রভোস্ট কাউন্সিল সভাপতি ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী। এছাড়া সদস্য সচিব হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আ. হ. ম. নুরুল ইসলাম ও সদস্য সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী।  

সাজিদের রুমমেট ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আমিন বলেন, আমি গত সোমবার বাড়ির উদ্দেশ্যে দুপুর ২টায় ক্যাম্পাসের বাসে চলে এসেছি। সাজিদের সঙ্গে সর্বশেষ রুমে থাকাকালীন কথা হয়েছিলো। আরেক রুমমেট মার্কেটিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের তুষার বলেন, বুধবার আমি মাস্টার্সের পরীক্ষা দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে দুপুর ৩টার পর রুম থেকে বের হওয়ার সময় তাকে রুমেই দেখেছিলাম।

সাজিদের বাবা আহসান হাবিবুল্লাহ কুষ্টিয়ায় ছেলের জানাজায় এসে সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছেলের মৃত্যু রহস্যজনক। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী বলেন, হলের ক্যামেরা কাজ করেনা সেটা আমার জানা ছিল না। বাজেটের অভাবে এতোদিন নতুন ক্যামেরা লাগানো সম্ভব হয়নি। রোববারের মধ্যে হলে নতুন ক্যামেরা লাগানো হবে।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, সাজিদের পোস্টমর্টেম হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসনের পৃথক তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সবকিছুর প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর আমরা প্রকৃত ঘটনা জানতে পারব।

সুরতহাল প্রতিবেদনের বিষয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক হোসেন ইমাম সংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে তার শরীরে অপমৃত্যুর কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। তবে ভিসেরা রিপোর্ট আসার পর আমরা নিশ্চিত বলতে পারবো।

ময়নাতদন্ত নিয়ে দায়িত্বরত কুষ্টিয়া মডেল থানার এস আই রেজাউল করিম বলেন, লাশটি পানিতে দীর্ঘক্ষণ থাকায় পরিপূর্ণ রিপোর্ট পেতে অন্ততপক্ষে দুই থেকে আড়াইমাস সময় লাগবে।


একুশে সংবাদ/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - ক্যাম্পাস

Link copied!