উত্তর অঞ্চলের মধ্যে কৃষি প্রধান এলাকা হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর তানোর উপজেলা। বর্তমানে উপজেলার মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে রোপা আমনের সারি বদ্ধ কাটা ধান । অন্য বছরের তুলনায় এবার আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে দেখা যাচ্ছে হাসির ঝিলিক। তবে ধানের দাম নিয়ে একটু শঙ্কিত রয়েছে কৃষক। উপজেলার বিভিন্ন আমন ধানের মাঠ ঘুরে দেখা যাচ্ছে, কৃষকের ঘাম ঝরানো কষ্টে অর্জিত আমন ধান সোনালী রঙে রঙ্গিন হয়ে পড়ে রয়েছে মাঠ জুড়ে।
জানা গেছে, উপজেলার প্রতিটি মাঠে প্রায় একসঙ্গে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটা ও মাড়াই। অন্যদিকে আমন ধান কাটার পরপরই সেই জমিতে আলু চাষিরা পুরোদমে শুরু করেছে আলু রোপণের প্রস্তুতি। অন্য বছরের তুলনায় এবার আলু চাষে কম ঝুঁকছে কৃষক। যার জন্য কমেছে জমি টেন্ডারের মূল্য। যে জমি আলু চাষের জন্যে বিঘা প্রতি ছিলো ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। এবার সেই জমি বিঘা প্রতি কমে হয়েছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা।
তানোর উপজেলা পাঁচন্দর ইউনিয়নের যশপুর গ্রামের কৃষক সাবের আলী বলেন, আমি ১৭ বিঘা জমিতে এবার রোপা আমন ধান চাষ করেছি। ধানও হয়েছে বাম্পার। বিগত দিনের চাইতে এবার বিঘা প্রতি ৩২ থেকে ৩৫ মন করে ফলন হচ্ছে। তবে ধানের দাম নিয়ে একটু শঙ্কিত রয়েছি।
ইনছান পারভেজ বলেন, আমার জীবনে কোনদিন এরকম ধানের ফলন দেখিনি। আমি ১২ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। যার ফলন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩শ মন। কিন্তু বর্তমান বাজারে ধানের দাম তুলনামূলক খুবই কম। কমপক্ষে প্রতি মণ হাজারের উপর দাম রাখা দরকার। তাহলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেত কৃষক বলে তিনি জানান।
তানোর পৌর এলাকার গুবির পাড়া গ্রামের প্রসিদ্ধ আলু চাষি আব্দুল হালিম জানান, তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে আলু চাষ করে আসছেন। গত বছর আলুতে ধরাশায়ী হয়েছেন।
এবার তিনি প্রায় ২৫০শ বিঘা জমিতে আলু চাষ করবেন। হঠাৎ করে আলুর দাম কিছু বৃদ্ধি হওয়ায় বীজ আলুর দামও বাড়তে শুরু করেছে। তার পরেও তিনি এবার আশানুরূপ ভাবে আলু চাষ করবেন বলে জানান।
কৃষি অফিস জানায়, এবার চলতি মৌসুমে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২২ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু অর্জন হয়েছে ২১ হাজার ৩৮৭ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এছাড়াও এবার আলু রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমি। গতবারের চাইতে এবার তুলনামূলক ভাবে আমনের বেশি ফলন হয়েছে। তবে দাম নিয়ে একটু অস্বস্তিতে রয়েছেন কৃষক।
একুশে সংবাদ/ এনআই



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

