AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ঘুরে আসুন রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি


Ekushey Sangbad
পর্যটন ডেস্ক
০৮:৫৪ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২৩
ঘুরে আসুন রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি

কোনো এক ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় অবস্থিত রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি থেকে। কবির ব্যবহূত বিভিন্ন আসবাব, শিল্পকর্ম, ফুলের বাগান, বৃক্ষরাজি, জাদুঘর- এ সবকিছুই আপনাকে মুগ্ধ করবে। শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি নিয়ে লিখেছেন অনিক আহমেদ

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতির সঙ্গে মিশে আছে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় পদ্মা নদী ঘেঁষে এই ঐতিহাসিক স্থানটি স্বগর্বে দাঁড়িয়ে আছে। জেলা শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থিত। স্থানটি প্রায় ১১ একর জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে। গ্রামীণ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এই পর্যটনস্থল দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজারো দর্শনার্থীর আগমনে দিনভর মুখর থাকে।

 

কুষ্টিয়া শহর থেকে ৪০ মিনিটের পথ, যেতে হয় সিএনজি অটোরিকশা বা অটোতে। গাড়ি থেকে নেমে কুঠিবাড়ির শুরুতে চোখে পড়ল সুবিশাল প্রবেশ তোরণ। এই ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলে ডান পাশে নজর কাড়বে দৃষ্টিনন্দন বিশাল নবনির্মিত জাদুঘর। এর সামনে রয়েছে প্রশস্ত উন্মুক্ত মাঠ। কবির জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে জানালেন স্থানীয়রা।


হেঁটে আরেকটু এগোতেই সামনে পড়বে মূল ফটক। ভেতরে প্রবেশ করতে এখান থেকে ২০ টাকা মূল্যের টিকিট সংগ্রহ করতে হয়, বিদেশিদের জন্য যা ২০০ টাকা। এই ফটকের বামে রয়েছে কবির বিখ্যাত দুটি কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলি ও সোনার তরী নামে দুটি ভবন। ভেতরে প্রবেশ করে সামনেই চোখে পড়বে এই পর্যটনস্থলের মূল কেন্দ্রবিন্দু কুঠিবাড়ি। দ্বিতল ভবনবিশিষ্ট এই বাড়ির নির্মাণশৈলী যে কারও নজর কাড়তে বাধ্য।


এখানে রয়েছে বিভিন্ন আকৃতির ১৬টি কক্ষ। পুরো ভবনটি কবির বিভিন্ন বয়সের ছবি এবং তাঁর ব্যবহূত বিভিন্ন আসবাব ও শিল্পকর্মে সমৃদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে- পালকি, কাঠের চেয়ার, টি-টেবিল, খাট, সোফাসেট, হলরুম, আরাম চেয়ার, পালংক, আলনা, আলমারি, স্পিডবোট, পদ্মা বোট, চিত্রকর্ম, কবিতা, হাতে লেখা চিঠি, পানি পরিস্কার যন্ত্র, সিন্দুক, ঘাস কাটার যন্ত্র, মাটি মসৃণ করার যন্ত্র, ছিন্নপত্র ইত্যাদি। দোতলায় রয়েছে একটি নজরকাড়া বারান্দা, যেখানে বসে কবি লিখতেন। দোতলার ওপরে রয়েছে পিরামিড আকৃতির ছাদ, যা ভবনটিতে বৈচিত্র্য এনে দিয়েছে।


কুঠিবাড়ির পুরো আয়তন অত্যন্ত সুন্দরভাবে গোছানো, পরিচ্ছন্ন এবং পরিপাটি। এখানে রয়েছে- একটি বিশাল আম বাগান, দুটো পুকুর, রবীন্দ্র মঞ্চ, পাঠশালা, একটি ফুলের বাগান ও বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষরাজি। বাড়ির একপাশে আছে ছোট্ট একটি গ্রন্থাগার, যেখানে রয়েছে কবির বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস, কাব্যগ্রন্থের সংগ্রহ। পুরো কুঠিবাড়ির চারপাশ ইটের দেয়াল দিয়ে ঘেরা।


কবি তাঁর অবস্থানকালে এই কুঠিবাড়িতে সাহিত্যচর্চা করতেন। এখানে তিনি রচনা করেছেন সোনার তরী, চৈতালী, চিত্রা সহ অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ। ১৯১২ সালে কবির বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলি-এর ইংরেজি অনুবাদ এখান থেকেই শুরু করেন। ১৯১৩ সালে এই গ্রন্থের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান। এ ছাড়া কবি শিলাইদহের এই বাড়িতে বসে বহু গান লিখেছেন।


বর্তমানে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি সংরক্ষিত একটি জাতীয় ইমারত। ১৯৫৮ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাড়িটি সংরক্ষণ করছে। সরকারি উদ্যোগে এখানে ‍‍`ঠাকুর স্মৃতি জাদুঘর‍‍` প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভবনটি এখন জাদুঘর হিসেবে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

ভ্রমণপিপাসুরা এখানে ঘোরাঘুরি করলে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ১০০ বছর আগে ফিরে যাবেন। এখানে কবিগুরুর সময়কালীন পরিবেশের একটা আবহ তৈরি হতে বাধ্য। ১১ একরের প্রতিটি পরতে পরতে যেন কবির স্মৃতি জড়িয়ে আছে! বৃক্ষরাজির ছায়ায় চারপাশে শানবাঁধানো পুকুরপাড়ে বসে বিশ্রাম করলে এখানে বসে কবির কবিতা লেখার স্মৃতি মনে পড়ে যেতে পারে!

শিলাইদহ কুঠিবাড়ি সংরক্ষিত একটি জাতীয় ইমারত। ১৯৫৮ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাড়িটি সংরক্ষণ করছে। সরকারি উদ্যোগে এখানে ‍‍`ঠাকুর স্মৃতি জাদুঘর‍‍` প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভবনটি এখন জাদুঘর হিসেবে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। শিলাইদহ কুঠিবাড়ি ১১ একর জমির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ১১ একরের প্রতিটি পরতে পরতে যেন কবির স্মৃতি জড়িয়ে আছে!

 

একুশে সংবাদ.কম/ক.ক/বি.এস

Link copied!