জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে জবাবদিহিতা, সমন্বয় এবং তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সচিবালয়ে ইউনিসেফ বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রানা ফ্লাওয়ার্স-এর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৈঠকে উপদেষ্টা বলেন, “জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে তরুণদের অন্তর্ভুক্তি অত্যন্ত জরুরি। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ অবকাঠামো ও পানি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর পরিবীক্ষণ ব্যবস্থায় তরুণ প্রতিনিধিদের যুক্ত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, পয়ঃনিষ্কাশন ও চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ইনসিনারেশনের বিকল্প হিসেবে নিরাপদ ও ব্যবহারিক সমাধান হিসেবে উন্নত প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে।
বৈঠকে ইউনিসেফ প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স শিশু ও কিশোরদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব তুলে ধরে বলেন, “বন্যা, অপুষ্টি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে বিঘ্নের মতো সমস্যাগুলো মোকাবেলায় ইউনিসেফ তরুণদের নেতৃত্বে climate solutions (জলবায়ু সমাধান) বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।”
তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় তরুণদের নিয়ে পরামর্শ সভার পরিসর বাড়ানোর পাশাপাশি তরুণদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষায় একটি কাঠামোগত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন।
পরিবেশ সচেতনতা তৈরিতে ইউনিসেফ একটি যৌথ ডকুমেন্টারি সিরিজ তৈরির প্রস্তাব দেয়, যাতে শিশুদের পরিবেশবান্ধব বার্তাগুলো স্থান পাবে। উপদেষ্টা এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
বৈঠকে উভয় পক্ষই পরিবেশ শিক্ষাভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু উদ্যোগ পরিচালনায় একমত পোষণ করে। পরিকল্পনায় পুনর্ব্যবহার, বর্জ্য পৃথকীকরণ এবং শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে জরুরি প্রস্তুতির কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের চিফ অব ওয়াশ পিটার জর্জ এল. ম্যাস, চিফ অব ফিল্ড সার্ভিসেস ফ্রাঙ্কো গার্সিয়া এবং প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট (জলবায়ু) ভ্যালেন্টিনা স্পিনেডি।
পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও ইউনিসেফ উভয় পক্ষই জলবায়ুবান্ধব নেতৃত্ব গড়ে তুলতে ও দেশের টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।
একুশে সংবাদ/এ.জে