ইসলামে আনন্দ ও ত্যাগের প্রতীক ঈদুল আজহা। হিজরি সনের জিলহজ মাসের ১০ তারিখে এই দিনটি উদযাপিত হয়। “ঈদ” শব্দের অর্থ আনন্দ, আর এটি বারবার ফিরে আসা এক মহা উৎসব—সেই অনুযায়ী এর নামকরণ।
ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহার নামাজও দুই রাকাত ওয়াজিব। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সাধারণত খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করতেন, তাই খোলা জায়গায় নামাজ পড়া সুন্নত। তবে আবহাওয়া বা পরিবেশ অনুকূল না থাকলে মসজিদেও নামাজ আদায় করা যায়।
ঈদের নামাজ আদায়ের নিয়ম
> ঈদের নামাজ শুধু জামাতে আদায় করা যায়; একা পড়া যাবে না।
> আজান ও ইকামত ছাড়াই ঈদের নামাজ আদায় করা হয়।
> কিরাত (সুরা) উচ্চ কণ্ঠে তিলাওয়াত করতে হয়।
> নামাজে মোট ছয়টি অতিরিক্ত তাকবির রয়েছে—তিনটি প্রথম রাকাতে এবং তিনটি দ্বিতীয় রাকাতে।
নিয়ত:
নিয়তের সময় বলা যাবে:
"আমি নিয়ত করেছি ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ ছয় তাকবিরসহ কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে আদায় করার জন্য—ইমামের অনুসরণে।"
নামাজের ধাপভিত্তিক বর্ণনা
প্রথম রাকাত:
> ইমামের সঙ্গে তাকবিরে তাহরিমা বলে হাত বাঁধবেন।
> তারপর ‘ছানা’ পড়বেন:
> "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়ালা ইলাহা গাইরুকা।"
>অতিরিক্ত তিন তাকবির বলবেন। প্রথম দুই তাকবিরে হাত উঠিয়ে ছেড়ে দিবেন, তৃতীয় তাকবিরে হাত বেঁধে নেবেন।
> এরপর ইমামের অনুসরণে সুরা ফাতিহা ও অন্য সুরা পড়া হবে।
> তারপর যথারীতি রুকু-সেজদা ও কিয়ামের মাধ্যমে রাকাত শেষ করবেন।
দ্বিতীয় রাকাত:
> বিসমিল্লাহ ও সুরা ফাতিহা পড়ার পর আরেকটি সুরা মিলাবেন।
> অতিরিক্ত তিন তাকবির দিবেন। প্রথম দুই তাকবিরে হাত উঠিয়ে ছেড়ে দিবেন, তৃতীয় তাকবিরের পর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাবেন।
> সেজদা ও বৈঠকের পর তাশাহহুদ, দরুদ ও দোয়া শেষে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন।
নামাজ শেষে তাকবির:
আরবি:
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاَللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ
উচ্চারণ:
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
অর্থ:
আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
ঈদের খুতবা
নামাজ শেষে ইমাম দুইটি খুতবা প্রদান করেন। খুতবা শ্রবণ মুস্তাহাব, অর্থাৎ না শুনলে গুনাহ হয় না, তবে এতেঈদের দোয়া ও ফজিলত থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মুসল্লিদের উচিত খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা।
একুশে সংবাদ /এ.জে