জাতীয় নির্বাচন সময়মতো না হলেও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট আয়োজন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মগবাজারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কমনওয়েলথের ‘ইলেকটোরাল সাপোর্ট’ শাখার উপদেষ্টা লিনফোর্ড অ্যান্ড্রুজের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তাহের বলেন, “আমরা চাই যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচন হোক। তবে যদি কোনো কারণে তা বিলম্বিত হয়, তবুও জুলাই সনদ ও সংস্কার সংক্রান্ত গণভোটটি আলাদাভাবে আয়োজন করতে হবে। কারণ এটি কেবল রাজনৈতিক নয়, রাষ্ট্রীয় সংস্কারের প্রশ্ন।”
তিনি আরও বলেন, “গণভোট হচ্ছে জনমতের প্রতিফলন, আর জাতীয় নির্বাচন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার নির্ণায়ক। এই দুই প্রক্রিয়া একত্রে করলে জুলাই সনদ প্রশ্নটি আড়ালে পড়ে যাবে। বরং এটি স্বাধীনভাবে সম্পন্ন হলে ভবিষ্যৎ রাজনীতির নতুন দিক উন্মোচিত হবে।”
জামায়াত নেতা বলেন, “আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে যদি গণভোটের তারিখ নির্ধারণ করা যায়, তাহলে মাসের শেষে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। এতে সময় ও অর্থ—দুটিই সাশ্রয় হবে।”
তাহেরের ভাষায়, “গণভোটের জন্য তেমন বেশি সময় বা অর্থের প্রয়োজন নেই। দেশের স্বার্থে সামান্য ব্যয় করেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত। এতে রাজনৈতিক সংস্কারের পথ প্রশস্ত হবে।”
তিনি আরও জানান, “অল্প সময় ও খরচে এই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তাই বিলম্ব না করে নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট শেষ করে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন প্রস্তুতি সম্পন্ন করা উচিত।”
নির্বাচন কমিশন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছি। যাতে ভোটগ্রহণের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার—সব বাহিনীর যৌথ মোতায়েন চেয়েছি। আমাদের লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।”
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, সাইফুল আলম খান মিলন ও মোবারক হোসাইন।
কমনওয়েলথ প্রতিনিধি দলে ছিলেন ড. দিনুষা পণ্ডিতরত্ন, ন্যান্সি কানিয়াগো, সার্থক রায় ও ম্যাডোনা লিঞ্চ।
বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ, সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ, এবং নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রতিনিধি দল জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনে কমনওয়েলথ পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে উপস্থিত থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, “গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন যদি একই দিনে হয়, তাহলে জুলাই সনদের গুরুত্ব ক্ষুণ্ন হবে। নির্বাচনের তীব্র প্রতিযোগিতায় তখন কেউ আর সংস্কারের গণভোটে মনোযোগ দেবে না।”
শেষে তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে। আমরা ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি দমন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

