জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই ঘোষণাপত্রকে অবশ্যই নতুন সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এটি শুধু একটি দলিল নয়, বরং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের আদর্শিক ভিত্তি গড়ে তুলবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন তিনি।
স্ট্যাটাসে নাহিদ ইসলাম লেখেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র কেবল সংবিধানে সংযুক্ত করলেই হবে না, এটি হতে হবে নতুন সংবিধানের মূল আদর্শ। প্রথমে এটি রাজনৈতিক ঐকমত্যের দলিল হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে, এরপর একে সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন,“এই ঘোষণাপত্রে জুলাইয়ের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা, শহীদ ও আহতদের মর্যাদা এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে।”
এর আগে শুক্রবার সকালে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় স্থানীয় এক সমাবেশে নাহিদ ইসলাম বলেন,
“ফ্যাসিস্ট পতনের পর আবারও দেশে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদকের বিস্তার ঘটেছে। যুবসমাজকে অধঃপতনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এই জন্য লড়াই করিনি, এই জন্য স্বৈরাচারের পতন ঘটানো হয়নি।”
তিনি বলেন, “জাতীয় নাগরিক পার্টি ইনসাফভিত্তিক একটি রাষ্ট্র চায়, যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে। আমরা দেখেছি, বিগত আমলে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বারবার নিপীড়ন হয়েছে। তাদের জমি দখল, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া এবং লুটপাটের ঘটনায় আওয়ামী লীগ সরকার কোনো সুবিচার করেনি।”
আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে গুটিকয়েক পরিবার জমিদারতন্ত্র ও স্বৈরশাসনের মাধ্যমে দেশের সব সম্পদ দখলে নিয়েছে। মুজিব পরিবার একটি পরিবারতন্ত্র, একটি স্বৈরশাসকগোষ্ঠী তৈরি করেছে, যারা সব সম্পত্তির মালিক হয়েছে।”
তিনি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা পুরোনো জমিদারি প্রথা ভেঙেছি। এখন যদি নতুন করে সেই প্রথা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস আবার গড়ে ওঠে, তাহলে আমাদেরকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। এই সংগ্রাম আটোয়ারী থেকেই শুরু করতে হবে।”
সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, “যদি কোথাও অন্যায়, জুলুম, অবিচার দেখেন, তাহলে চুপ করে থাকবেন না। প্রতিবাদ করুন, রুখে দাঁড়ান। এই দেশ জনগণের, কোনো পরিবার বা গোষ্ঠীর নয়।”
নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সংবিধান প্রস্তাব ও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’-কে কেন্দ্র করে আলোচনার নতুন ঢেউ তুলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
একুশে সংবাদ////র.ন