আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, দেশের উন্নয়নের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তাদের সম্মিলিত প্রতিরোধ করা হবে।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শেষে এসব কথা বলেন মাহবুবউল আলম হানিফ।
আওয়ামী লীগ দেশের সর্ব প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হলো বটবৃক্ষ। ধাক্কা দিয়ে, ঝাঁকি দিয়ে ফেলা যাবে আওয়ামী লীগ এমন দল নয়। এ স্বপ্ন যারা দেখছেন, তারা দিবাস্বপ্ন দেখছেন। আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের দল। জাতির পিতার হাতে গড়া আওয়ামী লীগকে হুমকি-ধমকি দিয়ে পরাস্ত করা যাবে না।’
যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় তাদের সম্মিলতভাবে মোকাবিলা করার জন্য অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে দেশের কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি। তারা এখন ঈর্ষান্বিত হয়ে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে বারবার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। অতীতে হরতাল, অবরোধের নামে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কোনো ষড়যন্ত্র উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘একাত্তরে যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল, তারা এক রাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে ইতিহাস বিকৃত করছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জ্বালাও-পোড়াও করে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে। এসব ইতিহাস প্রজন্মকে জানানো প্রয়োজন। কারণ, তরুণ প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস না জানলে বিপথগামী হতে পারে।’
হানিফ বলেন, ‘শেখ রাসেল জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র এটা যেমন সত্য; পুরো পৃথিবীর মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিষ্ঠুর এবং পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নির্মম শিকারের প্রতীক হিসেবেও পরিচিত।’
তিনি বলেন, ‘আজ যারা গণতন্ত্র, মানবাধিকারের কথা বলেন শিশু রাসেলের হত্যাকাণ্ড তাদের হৃদয়ে নাড়া দিতে পারেনি। নিষ্ঠুর এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে তাদের কোনো কথা নেই কেন?’
অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মধ্য দিয়ে এ বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। এটা সবার জানা উচিত। এত ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত দেশকে স্বাধীনতার চেতনা থেকে বিচ্যুত হতে দেয়া যাবে না।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রতিটি শিশুর প্রথম স্কুল তার ঘর, আর শিক্ষক মা-বাবা। শিশুদের নীতি-নৈতিকতা আদর্শে গড়ে তুলতে পারেন মা-বাবা। আমরা সবাই শিশুদের ডাক্তার, ব্যারিস্টার বড় আমলা বানাতে চাই। কিন্তু তাদের মানুষ হিসেবে গড়ার চিন্তা নেই। যার কারণে সমাজ থেকে আদর্শ মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে। পড়ালেখার পাশাপাশি শিশুদের মেধা বিকাশের সুযোগ দিন এবং নীতি-নৈতিকতা শিখিয়ে দিন, যাতে আদর্শ মানুষ হতে পারে।’
এসময় শিশুদের লেখাপড়ার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জের উপাচার্য জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গৌরব ’৭১ এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনি এবং সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় সম্মানিত বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক্স ডিজাইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সীমা ইসলাম ও সহযোগী অধ্যাপক সিদ্ধার্থ দে এবং চিত্রশিল্পী কিরীটী রঞ্জন বিশ্বাস।
`ভোরের পাখি শেখ রাসেল` শীর্ষক এ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় তিনটি বিভাগে অন্তত ৭০০ প্রতিযোগী অংশ নেন।
একুশে সংবাদ/য.টি/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :