জনস্বার্থবিরোধী কিছু হলে মেরুদণ্ড শক্ত রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল পদত্যাগ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বুধবার (২৪ জুলাই) সিইসির সাথে নির্বাচন ভবনে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হলো— এখনও উনারা (সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার) শুনতে চান। আউয়াল সাহেবের একটা গুণ হলো উনিতো জজ ছিলেন, অপর পক্ষের বক্তব্য শুনতে চান।’
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমি এখনও আশাপ্রদ যে, আমি আশাহত হবো না, উনি নিশ্চয় সফল হবেন। শক্ত থাকবেন। আমি মনে করি, জনস্বার্থবিরোধী কিছু হলে মেরুদণ্ড শক্ত রেখে উনি পদত্যাগ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘‘কমিশন খুব কঠিন অবস্থার মধ্যে চলছে। সরকারের উচিত হবে কিছুটা গিভ অ্যান্ড টেক করে সুষ্ঠু নির্বাচন করা। এটা করতে হলে আগ বাড়িয়ে কথা বলা বন্ধ করতে হবে। আজকেও হানিফ (আওয়ামী লীগ নেতা) বলেছেন, ‘দেড়শোটাতে নয়, তিনশো আসনেই ইভিএম চাই।’ উনাদের জন্য ভালো হবে চুপ করে থাকা। এখন ইভিএমের কারণে যদি নির্বাচনটাই বন্ধ হয়ে যায়, ইলেকশনটা যদি বয়কট হয়, তাহলে এটা জাতির জন্য খুব দুর্ভাগ্যজনক হবে।’’
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘সবাইকে নির্বাচনে নেওয়া ইসির মূল দায়িত্ব। ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ভুল হয়েছে। এমন কিছু করবেন না, যাতে নির্বাচনই না হয়। এজন্য আমার প্রস্তাব হলো ১৫০টির পরিবরর্তে ৩শ’ আসনের ৫টি করে কেন্দ্রে ব্যবহার করার।’
তিনি বলেন, না ভোটের কথা প্রবর্তনের কথা বলেছি। না ভোটের ব্যাপারে মত আছে। ইভিএম নিয়ে হটকারিতা করতে না করেছি। বলেছি, আপনাদের ওপর ধীরে ধীরে আস্থা বেড়েছে। সেই সুনামটা অক্ষুণ্ন রাখার চেষ্টা করেন। সিইসি বলেছেন, ‘আমরা ভেবে দেখি কী কী করা যায়।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপিসহ অন্য দল যদি ইভিএমের কারণে (নির্বাচন) বয়কট করে, দায়টা ইসির ঘাড়ে চাপবে। এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। সরকার যেমন দায়ী হবে, ইসিও তেমনই দায়ী হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে, উনারা যে শতভাগ একমত হয়েছেন তা না। উনারা সরকারের চাপে আছেন, উনারা ভাবছেন।’
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘ইভিএম আরেকটা ভোটের চক্রান্ত। কেন দায়িত্বটা আপনি নেবেন? সেজন্য বলেছি— উল্টা কাজ করতে পারেন কিনা। দেড়শোটাতেই না করে তিনশোটাতেই ৫টা করে কেন্দ্রে হবে। তাহলে আমরা দেখতে পারবো, জানতে পারবো। আমাদের জন্য দরকার সুষ্ঠু নির্বাচন, শেখ হাসিনার জন্যও দরকার। গণতন্ত্র না হলে দেশে যে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত চলছে, এই ওষুধের দোকান রাত ১২টা
পর্যন্ত খোলা, এটা পাগলামি ছাড়া কী হতে পারে! এতে কয়টা বাতি জ্বলবে বা ইয়ে… হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইভিএমের মাধ্যমে প্রতারণার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। সেজন্য গ্রহণ করা যাবে না।’
জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন দিতে জোনায়েদ সাকীর পক্ষে হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। এই বিষয়ে সিইসিকে বলেছি, আপনি এটা শেষ (নিবন্ধন) করে দেন। তাহলে লোকে আপনাকে ভুল বুঝবে না।’
প্রসঙ্গত, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে জাফরউল্লাহ চৌধুরী রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের দাবি নিয়ে আজ ২৪ আগষ্ট, বুধবার বেলা ১১ টায় আগারগাঁও নির্বাচন অফিসে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাক্ষাত করেন। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, সিনিয়র যুগ্ম যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মুজিবুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. সেলিম, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ ঈসমাইল, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পদ্ধতি বাতিলের দাবী পরিষদের আহ্বায়ক সৈয়দ হারুন অর রশীদ এবং সাধারণ সম্পাদক সোনার বাংলা পার্টি,রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পদ্ধতি বাতিলের দাবী পরিষতদর সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনেম। প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইসি বেলা ১১ টা হতে ১২ টা পর্যন্ত এক ঘন্টাব্যাপী
ইভিএম সমস্যাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। নির্বাচনে দলের নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানো ও শর্তাবলী শিথিলের একটি লিখিত আবেদন করেন।
একুশে সংবাদ.কম/ম.র.জা.হা
আপনার মতামত লিখুন :