উন্নত চিকিতসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি নেত্রীর শারীরিক অবস্থা ভালো না বলে উল্লেখ করে এ আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে তিনি সেই অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে সংগ্রাম করছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বিএনপি আয়োজিত মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, আমাদের এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসকরা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন তাকে সুস্থ করে তোলার। সুস্থ করে ঘরে পাঠিয়েছিলেন, আবার তিনি আক্রান্ত হয়েছেন বিভিন্ন রকম অসুখে। একটা অসুখ তার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বাইরে চিকিৎসা করতে পাঠানো জরুরি। ডাক্তাররাই বলছেন, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠালে তিনি সুস্থ হবেন। তারা আশা করছেন সেটা। দেশের একটা উন্নত হাসপাতাল, তারপরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা এখানে নেই। বিদেশে পাঠাতে হবে। আজকে অন্যান্য দলগুলোও বলছেন এ কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও দলটির নেত্রী সেটিকে গ্রহণ করছেন না।
তিনি বলেন, আমরা আহ্বান জানাতে চাই, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। তার জীবন রক্ষা করুন। এর সঙ্গে রাজনীতিকে নিয়ে আসবেন না।
মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার আহ্বানে এই দেশের মানুষ গণতন্ত্রকে এরশাদের হাত থেকে ছিনিয়ে এনেছিল। আজকে সেই গণতন্ত্র পুরোপুরিভাবে হারিয়ে গেছে। আজকে আওয়ামী লীগ ও তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা একটি স্বৈরাচারী সরকারের প্রচণ্ড রকমের দমন পীড়নের ফলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সমস্তকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, যে নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য তার সারাটা জীবন অতিবাহিত করলেন। যিনি একজন গৃহবধূ ছিলেন, শুধুমাত্র জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিলেন এবং দেশের পথে প্রান্তরে ছুটে বেড়িয়েছিলেন। সেই নেত্রী খালেদা জিয়াকে আজকে অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে, একটা মিথ্যা মামলা সাজিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর ধরে। তিনি দীর্ঘ আড়াই বছর একটি নির্জন কারাগারে, কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি নিম্নমানের ঘরের মধ্যে ছিলেন। যার ফলে অনেকগুলো ব্যাধি তারমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে কোনো চিকিৎসার সুযোগ ছিল না এবং তিনি চিকিৎসা না দেওয়ার ফলে আজকে তার অনেক রোগ দেখা দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, আমরা সবাই জানি নেত্রী আমাদের হৃদয়ের কতো কাছের মানুষ। এ দেশের ১৬ কোটি মানুষের কত কাছের মানুষ। একজন রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করুন, তিনিও দোয়া করেন যে আল্লাহ খালেদা জিয়াকে আপনি সুস্থ করে দেন। একজন শ্রমিককে জিজ্ঞেস করুন, তিনিও বলবে, আল্লাহ খালেদা জিয়াকে আপনি মুক্ত করে দেন। এ নেত্রীকে অপমান করা মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অপমান করা। কারণ ১৯৭১ সালে তিনি গৃহবন্দি ছিলেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন আলোচনা সভায়।
একুশে সংবাদ/জা/তাশা
আপনার মতামত লিখুন :