হাইল-হাওর আর জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধশালী একটি জেলা মৌলভীবাজার। এই জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাইল-হাওর বনাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রামের মাঠে-ঘাটে, গাছে-গাছে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখা গেলেও কালের বিবর্তনে এখন আর চিরচেনা পাখির দেখা মেলে আর। পাখির কলরবে মুখরিত গ্রাম এখন প্রায় পাখি শূন্য।বন-জঙ্গলের অপরূপ দৃশ্যপট এখন বদলে গেছে। পরিবেশ দূষণ, নির্বিচারে গাছ কাটা, জমিতে অতিরিক্ত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার, পাখির বিচরণ ক্ষেত্র, খাদ্য সঙ্কট আর জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে প্রায় বিলুপ্তির পথে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ আমাদের দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখি।
কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এর পার্শবর্তী গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, কয়েক বছর আগেও মানুষের ঘুম ভাঙতো পাখির ডাকে। পাখির কলকাকলিই বলে দিত এখন সকাল, শুরু হয়ে যেতো আমাদের কর্মব্যস্ততা।কিন্তু দিন দিন পাখির ডাক হারিয়ে যাচ্ছে, এখন গাছ-গাছালিতে আর পাখির ডাক নেই। আমাদের দেশের ঐতিহ্য ও শিল্পচর্চার সাথে পাখির যে যোগ, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই।মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা কমলগঞ্জ উপজেলা। এখানকার গ্রামের মাঠে-ঘাটে, চা-বাগান ও পাহাড়ি এলাকা থাকায় গাছে-গাছে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখা গেলেও কালের বিবর্তনে এখন আর চিরচেনা পাখির দেখা মেলে আর। ভোর বেলা পাখির কলরবে মুখরিত গ্রাম এখন প্রায় পাখি শূন্য। বন-জঙ্গলের অপরূপ দৃশ্যপট এখন বদলে গেছে। পরিবেশ দূষণ, নির্বিচারে গাছ কাটা, জমিতে অতিরিক্ত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার, পাখির বিচরণ ক্ষেত্র, খাদ্য সঙ্কট ও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে প্রায় বিলুপ্তির পথে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখি। এখন আর পাখির কিচিরমিচির শব্দে শিহরণ জাগানো সেই সুর এখন আর শোনা যায় না।
সরেজমিনে জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, ভানুগাছ আদমপুর ফরেস্ট বিট, শমসেরনগরসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রবীণদের সাথে কথা বললে তারা জানান, পাখির কিচিরমিচির শব্দে শিহরণ জাগানো সেই সুর এখন আর শোনা যায় না। সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় বাঁশের ঝাড়, আমের বাগান, বাড়ির ছাদে যেসব পাখি সব সময় দেখা যেত, ওই পাখি এখন আর চোখে পড়ে না।তবে কম সংখ্যক ঘুঘু, কাক, মাছরাঙ্গা ইত্যাদি পাখি গ্রামে বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেলেও জাতীয় পাখি দোয়েল তেমন আর চোখে পড়ে না। পাখি প্রিয় অনেক সৌখিন মানুষের বাড়ির খাঁচায় বন্দি করে কয়েক প্রজাতির পাখি পালন করতে দেখা যায়। দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির পথে। নতুন প্রজন্ম পাখি দেখতে পায় না, তারা তো অনেক পাখি চেনেই না। তাছাড়া শিকারিদের দৌরাত্ম্যে পাখিশূন্য হয়ে যাচ্ছে বনাঞ্চল। তাই বাধ্য হয়ে পাখি প্রেমীরা বাড়িতে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পালন করতে বাধ্য হচ্ছেন। যাতে নতুন প্রজন্ম পাখি সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানতে পারে। পাখির আবাসস্থল গাছ কাটার প্রভাব, ফসলি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ, বনাঞ্চল উজাড়, পাখি শিকার, পাখির মাংশের ব্যবসা ইত্যাদি কারণে অনেক পাখিই এখন বিলুপ্তির পথে বলে মনে করছেন সমাজের সচেতন মানুষরা। বিভিন্ন মৌসুমে পাখি শিকার এবং পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে অনেক পাখিই চলে যাচ্ছে অন্যত্র। পাখি শিকার বন্ধ ও পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা সচেতন মহলের।
জানা যায়, দোয়েল পাখি ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফসল রক্ষা করে থাকে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাখির সুন্দর চেহারা এবং মিষ্টি কলকাকলি পরিবেশকে আরও সুন্দর করে তোলে জাতীয় পাখি দোয়েল। পৌর এলাকায় বাড়ি শিক্ষক এইচ এম খালেদুর রহমান বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও মানুষের ঘুম ভাঙতো পাখির ডাকে।
পাখির কলকাকলিই বলে দিত এখন সকাল, শুরু হয়ে যেতো আমাদের কর্মব্যস্ততা। কিন্তু দিন দিন পাখির ডাক হারিয়ে যাচ্ছে, এখন গাছ-গাছালিতে আর পাখির ডাক নেই। আমাদের দেশের ঐতিহ্য ও শিল্পচর্চার সাথে পাখির যে যোগ, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই।’ গ্রামের প্রবীণদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ‘সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় বাঁশের ঝাড়, আমের বাগান, বাড়ির ছাদে যেসব পাখি সব সময় দেখা যেত, ওই পাখি এখন আর চোখে পড়ে না। তবে কম সংখ্যক ঘুঘু, কাক, মাছরাঙ্গা ইত্যাদি পাখি গ্রামে বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেলেও জাতীয় পাখি দোয়েল তেমন আর চোখে পড়ে না। অনেক সৌখিন মানুষের বাড়ির খাঁচায় বন্দি করে কয়েক প্রজাতির পাখি পালন করতে দেখা যায়।
তারা আরও জানান, নতুন প্রজন্ম পাখি দেখতে পায় না, তারা তো অনেক পাখি চেনেই না। তাছাড়া শিকারিদের দৌরাত্ম্যে পাখিশূন্য হয়ে যাচ্ছে বনাঞ্চল। পাখির আবাসস্থল গাছ কাটার প্রভাব, ফসলি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ, বনাঞ্চল উজাড়, পাখি শিকার, পাখির মাংশের ব্যবসা ইত্যাদি কারণে অনেক পাখিই এখন বিলুপ্তির পথে বলে মনে করছেন সমাজের সচেতন মানুষরা।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট পাখি বিশেষজ্ঞ ও লেখক ইনাম আল হক বলেন, ‘পাখি শিকার সহ জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের কারনে দোয়েল পাখি বর্তমানে সচরাচর চোখে পড়ে না, বর্তমানে অনেকটা প্রায় বিলুপ্তের পর্যায়, পাখি শিকার ও ছোট খাল বিল নদী নালা ভরাট বন্ধ করা সহ সামাজিক ভাবে মানুষকে সচেতন করতে পারলে দোয়েল পাখিসহ সকল পশুপাখি প্রজনন বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, পাখির সুরক্ষায় দেশে আইন তো আছে। আমরা চাই সেই আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন হোক। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য সরকারের উচিত আইন প্রণয়ন করে পাখি শিকারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ জোরদার করা, সরকারি-বেসরকারিভাবে পক্ষীকূল সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
হৃদয় দেবনাথ: প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক লেখক সাংবাদিক।
রিপোর্টার গাজী টেলিভিশন লিঃ