AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

আমেরিকা রেমিট্যান্সের একটি সমৃদ্ধ উৎস


Ekushey Sangbad
নন্দিতা রায়
১০:৩৫ পিএম, ২৪ মে, ২০২৩
আমেরিকা রেমিট্যান্সের একটি সমৃদ্ধ উৎস

সৌদি আরবের মতো প্রতিষ্ঠিত দেশগুলোকে ছাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের শীর্ষ রেমিট্যান্স সরবরাহকারী দেশ। গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই থেকে এপ্রিল) দেশে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী-আয় এসেছে ১ হাজার ৭৭২ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে প্রবাসী আয় ছিল ১ হাজার ৭৩০ কোটি ডলার। সৌদি আরবে ২০ লাখ বাংলাদেশি বসবাস করলেও যুক্তরাষ্ট্রে আছেন মাত্র ৫ লাখ বাংলাদেশি। অতীতে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিকেরা দেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে চলতি অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি অর্থ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।


বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী-আয়ের পুরো পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার। প্রবাসীদের পাঠানো সবচেয়ে বেশি অর্থ এসেছে সৌদি আরব থেকে, ৪৫৪ কোটি ডলার। ৩৪৪ কোটি ডলার নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ২০৭ কোটি ডলার নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। কিন্তু সম্প্রতি, প্যাটার্নটি পরিবর্তিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ও কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ৩০৪ কোটি ৭৩ লাখ মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন। এছাড়া প্রবাসী আয়ের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার আয় এসেছে সৌদি আরব থেকে। ২৪০ কোটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার নিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী-আয় এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে।


যুক্তরাষ্ট্রের রেমিট্যান্স বাড়ছে কেন? প্রথমত যুক্তরাষ্ট্র সরকার মহামারির কারণে চাকরি হারানো ব্যক্তিদের বিশেষ ক্ষতিপূরণ দিয়েছে, যা রেমিট্যান্স প্রবাহকে বাড়িয়ে তুলেছে। কারণ, প্রবাসীদের আয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর তুলনায় বেশি ছিল। দ্বিতীয়ত, অফিশিয়াল ব্যাংকিং চ্যানেলগুলোর প্রাধান্য এবং বৈধ চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তরের সুবিধা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের তাদের আয় দেশে পাঠাতে উত্সাহিত করেছে, যা সামগ্রিক রেমিট্যান্স প্রবাহের জন্য ইতিবাচক। উপরন্তু, হুন্ডি পদ্ধতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় না। বাংলাদেশ সরকার ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠনোর জন্য প্রণোদনার হার ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করেছে। প্রবাসীরা তাই অনুমোদিত পদ্ধতির মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে আরো অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।


তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক আহরণ করে, যা প্রবাসীদের আয় বাড়ায়। উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে। ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষ এবং তার আগের বছরের মধ্যে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০২২ সালের ওপেন ডোরস রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনাল এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, গত শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড-সংখ্যক ১০ হাজার ৫৯৭ জন শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত ১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা তিন গুণেরও বেশি বেড়েছে।


চতুর্থত, আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচ্যাম) ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল দাবি করেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে তাদের মজুরি বেশি হওয়ায় দক্ষ শ্রমিকেরা যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হন। এ কারণেই হয়তো যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।


পঞ্চমত, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষাগত অভিবাসনের গতি ধীর, কিন্তু অবিচ্ছিন্নভাবে বেড়ে চলেছে। নানা লোভনীয় সুবিধা, বৃত্তি ও উচ্চতর অধ্যয়নের সম্ভাবনার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।


ষষ্ঠত, অর্থনৈতিক অসুবিধার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে বেকারত্বের হার বেড়েছে এবং বিদেশি কর্মীদের জন্য কম বেতন দিতে দেখা গেছে। বাংলাদেশে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ছুটির দিন পহেলা বৈশাখ ও ঈদুল ফিতরে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা মার্চ মাসে ২০২ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। আমরা আশা করি, আসন্ন ঈদুল আজহায় বাংলাদেশের রেমিট্যান্স বাড়বে উল্লেখযোগ্য হারে।


লেখক : পিএইচডি গবেষক, গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

 

Link copied!