AB Bank
  • ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রাণনাশের হুমকির‍‍` অভিযোগ কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে


Ekushey Sangbad
ওবায়দুল্লাহ,কুবি প্রতিনিধি
০১:১২ এএম, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫

সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রাণনাশের হুমকির‍‍` অভিযোগ কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বাসে প্রবেশ করা নিয়ে মার্কেটিং বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে বাগ্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে ‍‍`মারধর এবং সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রাণনাশের হুমকির‍‍` অভিযোগ তুলেছে গণিত বিভাগের এক শিক্ষার্থী। 

তবে, এসকল অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি এবং প্রক্টর অফিসে উদ্ধ্যতপূর্ণ আচরণের অভিযোগ তুলেছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে এই ঘটনা নিয়ে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রথমে অভিযোগপত্র দায়ের করে। পরবর্তীতে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভিন্ন দুইটি অভিযোগ উল্লেখ করে দুটি অভিযোগপত্র জমা দেয় প্রক্টরিয়াল বডি বরাবর। 

অভিযোগ দায়ের করা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদ্বয় হলেন গণিত বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের জনি দাস এবং মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী। 

জানা যায়, দেড়টার দিকে গণিত বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জনি দাস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিআরটিসি ডাবল ডেকারের বাসে প্রবেশ করার সময় সেখানে মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের তিনজন নারী শিক্ষার্থী ছবি তুলছিলেন। ডাবল ডেকার বাস হওয়ায় বাসের দ্বিতীয় তলায় উঠতে হলে বাসের পেছনের দিকে একটিই দরজা থাকে। আর সেখানে মার্কেটিং বিভাগের তিনজন নারী শিক্ষার্থী ছবি তুলছিলেন।

ফলে এনিয়ে দু‍‍`পক্ষ বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পরেন। পরবর্তীতে ওই নারী শিক্ষার্থী তাঁর ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহাদাত তানভীর রাফিকে ফোন দিলে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন এবং অভিযোগকারী শিক্ষার্থী জনি দাসকে মারতে উদ্যত হন। প্রথমে ঘুসি দিতে উদ্যত হলে সেটা সেখানে উপস্থিত অন্যান্যরা প্রতিহত করেন। 

তবে অভিযোগকারী জনি দাস দাবি করেন, প্রথমে ঘুসি অন্যান্যরা ফেরালেও পরবর্তীকে রাফি তাকে লাথি মারেন এবং বাগ্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী শাহাদাত রাফি সমন্বয়ক পরিচয়ে তাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন।তবে অভিযুক্ত রাফি দুটো অভিযোগকেই মিথ্যা বলে দাবি করছেন।

এনিয়ে অভিযুক্ত শাহাদাত তানভীর রাফি বলেন, ‍‍`বাসে আমার এক বান্ধবীর সাথে গণিত বিভাগের ১৬ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বেয়াদবি করেছে। সে তার সিনিয়র এক মেয়ে শিক্ষার্থীকে ঠেলে বাসে উঠে গেছে এটা আমার কাছে খারাপ লাগছে এবং সবারই খারাপ লাগার কথা এ ধরনের ঘটনায়।‍‍`

মারামারির বিষয়ে তিনি বলেন, ‍‍`সে জুনিয়র হয়ে সিনিয়র মেয়ে শিক্ষার্থীর সাথে খারাপ ব্যবহার করায় আমি একটু আক্রমণাত্মক ছিলাম। ফলে তাকে মারতে উদ্যত হয়েছিলাম; কিন্তু মারি নাই। ওখানে আরও শিক্ষার্থীরা ছিল তারা আমাকে ধরে ফেলে। মারামারির ঘটনাই ঘটেনি, প্রাণনাশের হুমকি কীভাবে হয়? তাই এখানে প্রাণনাশের হুমকি স্বরূপ আমি কিছুই দেখছি না।‍‍`

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জনি দাস বলেন, ‍‍`আমি বাসে উঠতে যাই, তখন ওখানে তিনজন মেয়ে ছবি তুলেছিলো। আমি উনাদের সরতে বললে উনারা সরে নাই, আমাকে অন্য দরজা দিয়ে উঠতে বলে৷ কিন্তু, বাসের দ্বিতীয় তলায় উঠতে হলে পেছনের একটিই দরজা। এটা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয় তখন। পরবর্তীতে উনি (নারী শিক্ষার্থী) উনার এক বন্ধুকে (রাফি) ফোন দিয়ে নিয়ে আসে। উনি (রাফি) এসেই আমাকে মারতে উদ্যত হয়। শুরুতে উনার ঘুষি অন্যান্যরা প্রতিহত করলেও ডান পা দিয়ে আমাকে দিয়ে লাথি মারে।‍‍`

তিনি আরও বলেন, ‍‍`আমি শহরের কই থাকি, কোন মেসে থাকি, ঠিকানা বলার জন্য চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে আমাকে দেখে নিবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন।‍‍`

এদিকে প্রক্টর অফিস বন্ধ হওয়ার পর গণিত বিভাগের দুই শিক্ষার্থী কর্তৃক মার্কেটিং বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি এবং প্রক্টর অফিসে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ তুলে দুটি অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। 

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের দেওয়া অভিযোগপত্র দুটিতে বলা হয়, ক্লাস প্রেজেন্টেশন শেষে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী এবং তাঁর কিছু বন্ধু বাসের সামনে ছবি তোলার সময় একজন নারী শিক্ষার্থী জনি দাস কর্তৃক অশালীন আচরণ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যের শিকার হন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে প্রক্টরের সামনে আবারও জনি দাস এবং ফারহান কর্তৃক ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের শিকার হন।

এছাড়া ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর বন্ধু শাহাদাত রাফির বিষয়ে তোলা অভিযোগগুলোকে মিথ্যা দাবি করে ক্যাম্পাসে ওই নারী শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কায় থাকার কথা জানান।

ঔদ্ধত্য আচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত গণিত বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান ফারহান বলেন বলেন, ‍‍`প্রক্টর অফিসে যাওয়ার কিছু সময় বসে থাকার পর রাফি ভাই যখন গনিত বিভাগের সিনিয়র ভাইদের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলছে তখন আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করছি উনি কোন ক্ষমতার বলে আমার বন্ধু গায়ে হাত তুলেছেন? কোন অপশক্তির কারণে উনি আমার বন্ধুকে হুমকি দিয়েছে? তখন কথার এক পর্যায়ে সে আমাকে উচ্চস্বরে কথা বলায় আমি তাকে উচ্চস্বরে জবাব দেই আর এর প্রেক্ষিতে ওই আপু (ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী) আমাকে প্রক্টর স্যারের সামনে বেয়াদব বলে সম্বোধন করে। তখন আমি উনাকে জিজ্ঞেস করেছি যে, আমাকে বেয়াদব বলার অধিকার উনাকে কে দিয়েছে? আর ঐখানে সব কিছুই প্রক্টর স্যারদের সামনেই হয়েছে।‍‍`

অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‍‍`আমি বাসের গেটে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলাম। এমন সময় ওই ছেলে (জনি দাস) এসে আমাকে গেইট থেকে সরে দাঁড়াতে বলে। তখন আমি খুবই আন্তরিকভাবে তাকে অন্য গেইট দিয়ে উঠতে বলি। তখন সে ‍‍`বাস কি ছবি তোলার জায়গা?‍‍` বলে আমাকে ঠেলে উপরে উঠে যায় এবং আমাকে বলে আমি কোন ব্যাচের? ঘটনাস্থলে যারা উপস্থিত ছিল সবাই দেখেছে ওই ছেলে আমার সাথে কীভাবে কথা বলছে।‍‍`

তিনি আরও বলেন, ‍‍`পরে প্রক্টরিয়াল বডি যখন আমাদেরকে ডাকায়, তখন প্রক্টরিয়াল বডির সামনেও তারা আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। এমনকি তারা জুনিয়র হয়েও আমাকে বেয়াদব বলে মারতে আসে।‍‍`

এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: আবদুল হাকিম বলেন, ‍‍`গণিত বিভাগের অভিযোগপত্রটা পেয়েছি। মার্কেটিং বিভাগের অভিযোগপত্র গুলো অফিস বন্ধ হওয়ার পরে দপ্তরে জমা দিয়ে গিয়েছে। ফলে এগুলো এখনো হাতে পাইনি। আগামী রবিবারে আমরা এবিষয়টা নিয়ে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিব।‍‍`

এ ঘটনায় প্রক্টর অফিসে উভয় বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটনের দাবি তুলেন।

উল্লেখ্য, শাহাদাত তানভীর রাফি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সক্রিয় থাকলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠিত ৫৪ সদস্যের সমন্বয়কের তালিকায় তিনি ছিলেন না।


একুশে সংবাদ/এ.জে

Link copied!