যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বাংলাদেশ। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন যুক্তরাজ্য সফরে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলবে সরকার। এই সফর আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়ায় সমর্থন আদায়ের একটি কৌশলগত প্রচেষ্টা হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।
বুধবার (৪ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী।
চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আগামী ৯ জুন লন্ডন যাচ্ছেন অধ্যাপক ইউনূস। সফরে তার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের কথা রয়েছে—১১ জুন: লন্ডনে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।১২ জুন: বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও পরে সেন্ট জেমস প্রাসাদে “কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড” গ্রহণ।এছাড়াও তিনি অংশ নেবেন যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী থিঙ্ক ট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত এক সংলাপে।
বিগত সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা ও ব্যবসায়ীদের অর্থপাচার সংক্রান্ত প্রশ্নে রুহুল আলম বলেন, “আমরা ব্যক্তি ফেরাতে যতটা গুরুত্ব দিচ্ছি, তার চেয়েও বেশি গুরুত্ব পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে।” তিনি জানান, আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামো (MLA – Mutual Legal Assistance) এর আওতায় যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সরকার ইতোমধ্যে কাজ করছে।
তবে সময় ও প্রোটোকলের কারণে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই বিষয়ে গভীর আলোচনা সীমিত থাকে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরও গভীর করা এবং দুই দেশের অর্থনীতি নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড়েও সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
যুক্তরাজ্য সফরে বিমান সংক্রান্ত কোনো চুক্তি বা এয়ারবাস ক্রয়ের আলোচনা হবে কিনা— এমন প্রশ্নে রুহুল আলম বলেন, “এ বিষয়ে সরকারের কোনো নির্ধারিত পলিসি বা পরিকল্পনা নেই। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে উত্থাপন করলে তা বিবেচনা করা হবে।”
চলতি সফরে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কোনো সমঝোতা স্মারক (MoU) কিংবা চুক্তি হচ্ছে না বলে নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
একুশে সংবাদ/ ঢ.প/এ.জে