বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে নগরভবন ঘেরাও করে টানা চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন তার সমর্থকরা। রোববার (১৮ মে) সকাল থেকে নগরভবনের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে চলমান এ বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ইশরাক সমর্থকরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জড়ো হন নগরভবনের সামনে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন চারপাশ—“শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই”,“অবিলম্বে ইশরাক হোসেনের শপথ দিতে হবে”,“জনতার মেয়র ইশরাক ভাই, অন্য কোনো মেয়র নাই”।
ফটক আটকে রাখার ফলে সেবা গ্রহণে আসা সাধারণ মানুষ ও সিটি করপোরেশনের কর্মীরা প্রবেশ করতে না পারায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন ইতোমধ্যে আদালতের রায়ের মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল তার পক্ষে রায় দেন।
এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন (ইসি) গেজেট প্রকাশ করে তাকে মেয়র ঘোষণা করে। তবে শপথ অনুষ্ঠান এখনও আয়োজন করা হয়নি।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক বলেন,“আমরা আইনি প্রক্রিয়া মেনে রায় পেয়েছি। অথচ গেজেট প্রকাশের ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও আমাকে শপথ করানো হয়নি। এটি আদালতের অবমাননার শামিল।”
তিনি দাবি করেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে শপথ বিলম্বিত করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ শুরুতে নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চায়, তারা ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবে কিনা। পরে ১৩ মে ইসি জানায়, তারা আর আপিল করবে না।
তারপরও এখনো শপথের তারিখ নির্ধারণ না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ইশরাকের সমর্থকরা।
সিটি করপোরেশনের একজন কর্মকর্তার ভাষ্য,“সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং কমিশনের সিদ্ধান্ত ছাড়া আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একটি নিরপেক্ষ আদালতের রায়ের পরও প্রশাসনিক দিক থেকে শপথ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়া অগণতান্ত্রিক দৃষ্টান্ত হতে পারে। একইসঙ্গে এর ফলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নগরভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলমান ছিল। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/ আ.ট/এ.জে