আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৯ মাস পর দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। হত্যা মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে তিনি ইমিগ্রেশন পার হয়ে বিদেশে যেতে পারলেন—এ নিয়ে উঠেছে তীব্র প্রশ্ন। এরইমধ্যে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ চিকিৎসাজনিত কারণে বিদেশ যাত্রা এবং নিষেধাজ্ঞা না থাকাকে দেশত্যাগের অনুমতির কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা দিয়েছে।
বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন আবদুল হামিদ। তার দেশত্যাগের বিষয়টি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তারা জানায়, রাত ১১টার দিকেই তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছান, এরপর ইমিগ্রেশনে সব কিছু যাচাই-বাছাই শেষে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নামও রয়েছে।
এ মামলার কেন্দ্রবিন্দু ছিল জুলাই মাসের ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের’ সময় সংঘটিত গণহত্যা। যদিও এই মামলার আগ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে অর্ধশতাধিক মামলা হলেও, সেখানে আবদুল হামিদের নাম আসেনি।
দেশ ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কোনো ট্রাভেল ব্যান বা লুকআউট নোটিশ জারি ছিল না। চিকিৎসার উদ্দেশ্যেই তিনি দেশ ছেড়েছেন, তাই নিয়ম অনুযায়ী তাকে আটকে রাখা হয়নি।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি দেশে বিচারাধীন থাকলে স্বাভাবিকভাবে তার বিরুদ্ধে যাতায়াত সীমাবদ্ধতা বা আদালতের নির্দেশ থাকা উচিত। যদি তা না থাকে, তাহলে মামলা দায়ের হলেও তাকে আটকানো সম্ভব নয়—তবে এটিই হয়ে উঠেছে প্রশ্নবিদ্ধ।
আবদুল হামিদ ২০১৩ সালে প্রথমবার ও ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। এর আগে তিনি ছিলেন স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং দীর্ঘদিনের সংসদ সদস্য। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রান্তিক অঞ্চল কিশোরগঞ্জের সন্তান তিনি।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :