ঈদ পরবর্তী সময়ে দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গন অনেকটাই চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল। কিন্তু কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া সহিংসতা ও কারফিউ জারি করায় দেশের সবকিছুর মতো ছন্দপতন হয়েছে বড়পর্দায়। সিনেমা হল ও মাল্টিপ্লেক্স বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই খুলে দেওয়া হবে প্রেক্ষাগৃহগুলো। তবে এই বন্ধ থাকা অবস্থায় দেশের এই মাধ্যম অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যবসার যে ধারা ছিল সেই ধারা খোলার পর স্বাভাবিক থাকবে না বলেও মনে করছেন সিনেমা হল সংশ্লিষ্টরা।
সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, দেশের সর্ববৃহৎ মাল্টিপ্লেক্স চেইন স্টার সিনেপ্লেক্স। স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (মিডিয়া ও বিপণন) মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান বৃহস্পতিবার দর্শক কম ছিল সেদিন থেকেই তারা শো বাতিল করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার থেকেই শো বাতিল করি। এরপর কারফিউ জারি হলে আমরা নির্দেশনা মান্য করি। এখন আমরা সরকারি নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি, হল খুলে দিতে বললেই আমরা খুলে দেব।’
তবে এই বন্ধ থাকায় যে ক্ষতি হচ্ছে তা খুলে দেওয়ার পরেও স্বাভাবিক হবে কি না সংশয় রয়েছে বলে মনে করেন স্টার সিনেপ্লেক্সের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘সিনেমা ব্যবসাটা অনেকটা মার্কেটিংয়ের ওপর নির্ভর করে। ঈদের পরে যে ধারায় ব্যবসা এগোচ্ছিল তা আকস্মিকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে সিনেমা হল খুললেই যে আমরা স্বাভাবিক দর্শক পাব এমনটা নাও হতে পারে।’
দেশের বৃহৎ চেইন মাল্টিপ্লেক্স চলতি বছরেই দেশে আরও ১০টি সিনেপ্লেক্স চালুর কথা জানিয়েছিল। এর মধ্যে রাজধানীর উত্তরায় চারটি, নারায়ণগঞ্জে দুটি, চট্টগ্রামে দুটি, বগুড়ায় দুটি করে চালু হবে চলতি বছরেই। আগামী বছরের মধ্যে ঢাকার গুলশান-বনানী এলাকায় অত্যাধুনিক মানের ও কুমিল্লায় সিনেপ্লেক্স চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। কক্সবাজারে অনুমতি পেলে এবং দেশের উপজেলা পর্যায়ে চালু হবে সিনেপ্লেক্সের শাখা। এসব চালুর ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ।
তবে একক পর্দার প্রেক্ষাগৃহগুলো কবে খুলবে নিশ্চিত করে বলছেন না হল মালিকরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও অনেক প্রেক্ষাগৃহ খুলবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশ হল মালিক সমিতির (প্রদর্শক সমিতি) সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বললেন, ‘দেশের পরিস্থিতি আগে স্বাভাবিক হোক তারপর বলা যাবে কবে হল খুলবে। এখন আমরা বাসায় একদম চুপচাপ বসে আছি। দেশের এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়তো হলগুলো খোলার সিদ্ধান্ত নেব।’
হল খুলে দেওয়া হলে ব্যবসা স্বাভাবিক হবে কি না এটা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন প্রদর্শক সমিতির এই নেতা। তিনি বলেন, আমরা তো এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। হল খুললে সেটা সামাল দিতে পারব কি না জানি না। এখন অপেক্ষা করছি পরিস্থিতিটা স্বাভাবিক হওয়ার। আজকের দিনটা পার হলে হয়তো বোঝা যাবে।
একুশে সংবাদ/ই/হা.কা



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

